• ‘সোমার চাকরি থাকলে আমার নয় কেন?’, বুক ফাটা কান্না ক্যান্সার আক্রান্ত শিক্ষক সুশান্তর
    এই সময় | ০৫ এপ্রিল ২০২৫
  • শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ ক্যান্সার। প্রতি চার মাস অন্তর ৭০ হাজার টাকা খরচ করে চলছিল লিউকোমিয়ার চিকিৎসা। ছাপোষা মধ্যবিত্ত পরিবারের সুশান্ত দত্ত স্ত্রী-কন্যা নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থেকেও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ব্লাড ক্যান্সারের সঙ্গে। কারণ তাঁর একমাত্র সহায় ছিল সরকারি স্কুলের চাকরি। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাতারাতি চাকরিহারা উত্তর দিনাজপুরের ইসলামুরের এই সরকারি স্কুলের শিক্ষক। অন্ধকার ভবিষ্যতের কথা ভেবে আঁতকে উঠছেন তিনি। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী।

    ইসলামপুরের দুর্গানগরের বাসিন্দা সুশান্ত দত্ত। ২০১৬ সালে SLST পরীক্ষা দেন। ২০১৯ সালে চাকরি পেয়েছিলেন চোপড়ার মাঝিয়ালি হাইস্কুলে। ইতিহাস বিভাগের সহ-শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। SSC দুর্নীতিতে যোগ্য-অযোগ্য বাছাই না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি গিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন সুশান্তও।

    চাকরিহারা এই শিক্ষকের কথায়, ‘আমি কোনওদিন কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। মেধার জোরে চাকরি পেয়েছি। এই চাকরির ভরসাতেই সংসার চালাচ্ছিলাম। ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ জোগাড় করছিলাম। রাতারাতি সব চলে গেল। এ বার কী ভাবে সংসার চলবে? হয়তো বিনা চিকিৎসাতেই আমার মৃত্যু হবে। তখন আমার স্ত্রী ও সন্তানকে কে দেখবে?’

    বীরভূমের নলহাটির মধুরা হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষিকা সোমা দাসের নাম SSC-র বিতর্কিত প্যানেলে থাকলেও তাঁর চাকরি বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন তিনিও। ‘মানবিকতার কারণে’ চাকরি বহালের নির্দেশ মিলেছে। ইসলামপুরের চাকরিহারা সুশান্তের দাবি, ‘আমিও ক্যান্সার আক্রান্ত। সোমা দাসের চাকরি থাকলে আমার বিষয়টিও বিবেচনা করুক সরকার, আদালত। আমিও মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করছি।’

    স্বামীর চাকরি যাওয়ায় চোখে অন্ধকার দেখছেন সুশান্ত দত্তর স্ত্রী সঙ্গীতা। তিনি বলেন, ‘কী ভাবে সংসার চলবে, কী ভাবে তিন বছরের মেয়েকে মানুষ করব, কিছুই ভাবতে পারছি না। মে মাসেই চিকিৎসার জন্য মুম্বইয়ের টাটা মেডিক্যাল সেন্টারে যাওয়ার কথা। কোথা থেকে সেই টাকা আসবে জানি না।’ তাঁরও কাতর আর্জি, সোমা দাসের ন্যায় ক্যান্সার আক্রান্ত তাঁর স্বামীর চাকরিও ফেরানো হোক।

  • Link to this news (এই সময়)