দিব্যেন্দু সিনহা, জলপাইগুড়ি
জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরির ঘটনা আগেও সামনে এসেছে। এ বার স্কুলের জাল ট্রান্সফার সার্টিফিকেটও সামনে এসেছে। ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য নথি হিসেবে জমাও পড়েছে ওই জাল সার্টিফিকেট! ঘটনাটি জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের। ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সদর ব্লক প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। ওই সার্টিফিকেট কী ভাবে ওই আবেদনকারীর কাছে এল, তা বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মণিকা দাস নামে এক মহিলা ১৭/১২২ নম্বর পার্টে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। তার ভিত্তিতে সরকারি অফিসারেরা মণিকার বাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সদর বিডিও দপ্তরে জমা করেন। সুত্রের খবর, ওই কাগজপত্রের মধ্যে মণিকার বাবা উত্তম দাসের ভোটার কার্ড এবং গড়ালবাড়ি হাইস্কুল থেকে দেওয়া একটি ট্রান্সফার সার্টিফিকেট রয়েছে। ওই সার্টিফিকেটটি দেখে সন্দেহ হয় কর্মীদের। সার্টিফিকেটে ডাঙ্গাপাড়ার ঠিকানা দেওয়া ছিল। কিন্তু ডাঙ্গাপাড়া জায়গাটা ঠিক কোথায়, তা উল্লেখ করা হয়নি। এর পরেই ওই সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশনের জন্য পাঠানো হয়েছিল গড়ালবাড়ি হাইস্কুলে।
শুক্রবার স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মদন সরকার জানিয়েছেন, ওই সার্টিফিকেটটি জাল। সার্টিফিকেটে ০৬.০৪.২০১২ তারিখ উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষক হিসেবে বি রায়ের সই আছে। কিন্তু ওই নামে ওই সময়কালে কোনও প্রধান শিক্ষক স্কুলে ছিলেন না। ২০১২–য় প্রধান শিক্ষক ছিলেন অভিজিৎ ঘোষ।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে স্কুলের নামে জাল সার্টিফিকেট তৈরি হচ্ছে? সমস্ত কিছু নিয়ে অভিযোগ জানানো হবে বলে দাবি প্রধান শিক্ষকের। প্রশ্ন, স্কুলের কর্মীদের কেউ কি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত? না–হলে কী ভাবে এটা করা সম্ভব? জলপাইগুড়ি বিডিও দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মণিকাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিলো। তিনি ওই সার্টিফিকেট নিয়ে কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তাই, ভোটার তালিকায় নাম তোলা সংক্রান্ত তাঁর আবেদন খারিজ করা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি সদর বিডিও মিহির কর্মকার জানিয়েছেন, স্কুলের ট্রান্সফার সার্টিফিকেট জাল — এটা অবিশ্বাস্য। জাল নথি নিয়ে সতর্ক আছে প্রশাসন। যে কারণে আবেদনকারীদের সমস্ত নথি ভালো করে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই মহিলা গড়ালবাড়ি হাইস্কুলের ওই সার্টিফিকেট কোথা থেকে পেলেন, এর পেছনে কারা আছেন, পুরোটা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।