• বিলের মাঝে দুই নৌকার সংঘর্ষ, তলিয়ে গেল ছাত্রীরা, তারপর?
    আজকাল | ০৬ এপ্রিল ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের একবার নৌকা চালকদের অসাবধানতার জন্য মুর্শিদাবাদের ভান্ডারদহ বিলের জলে পড়ে গেল দুই ছাত্রী। যদিও নৌকায় উপস্থিত লালনগর হাই স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক এবং স্থানীয় কিছু গ্রামবাসীদের তৎপরতায় কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচেছে তারা। শনিবার স্কুলে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওই ছাত্রীরা। 

    ২০১১ সালের ১২ এপ্রিল লালনগর ঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটের দিকে যাওয়ার সময় একটি ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় পাঁচ ছাত্র-ছাত্রীর ভান্ডারদহ বিলের জলে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়। তারপর প্রশাসনের তরফে দুই ঘাটের মধ্যে চলাচলকারী নৌকাগুলো সংস্কার এবং জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়। তবে সমযের সঙ্গে সঙ্গে নজরদারি কমতে থাকায় ফের একবার দুই ঘাটের মধ্যে চলাচলকারী নৌকাগুলো কোনওরকম বিধিনিষেধ মানছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। 

    লালনগর হাই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, 'সাধারণভাবে এখন দু'টি ঘাটের মধ্যে একটি নৌকা যাতায়াত করে। তবে আজ সকালে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেশি থাকায় নপাড়া- শিমুলিয়া এবং লালনগর ঘাটের মধ্যে দু'টি নৌকা চলাচল করছিল। নৌকা দু'টি যখন ভান্ডারদহ বিলের মাঝামাঝি আসে তখনই তাদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।' 

    স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লালনগরমুখী নৌকায় সওয়ার ছিল পূজা মণ্ডল এবং রিমা মণ্ডল নামে দশম এবং নবম শ্রেণির দুই ছাত্রী। নৌকা দু'টির ধাক্কায় টাল সামলাতে না পেরে তারা ভান্ডারদহ বিলের মাঝে পড়ে যায়। চোখের সামনে দুই ছাত্রীকে তলিয়ে যেতে দেখে দ্রুত নৌকা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন কয়েকজন মাঝি এবং নৌকার কয়েকজন যাত্রী। 

    সূত্রের খবর, কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরেই দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। লালনগর হাই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, 'শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা পূজা এবং রিমা আজ স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে আসছিল। কিন্তু ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার কারণে দুই ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে এবং তাদের পেটে জল চলে যাওয়ায় তারা অসুস্থ বোধ করতে থাকে। এর ফলে আজ দুই ছাত্রীর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি।'

    স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, তাদেরকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত এই নৌকা করেই ভান্ডারদহ বিল পারাপার করতে হয়। বহুবার বলার পরও মাঝিরা নৌকাতে কোনও জীবন রক্ষাকারী উপকরণ রাখেননি। 

    হরিহরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক নিয়ামত শেখ বলেন, 'এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে ওই বিলের মধ্যে দিয়ে চলাচলকারী নৌকাগুলোতে জীবন রক্ষাকারী কোনও জিনিস থাকে না। খোলা নৌকায় শক্ত করে ধরার মতো কোনও জিনিসও যাত্রীদের হাতের কাছে থাকে না। আমি সকলকে বলব নৌকাতে যাতে জীবনরক্ষাকারী প্রয়োজনীয় জিনিস রাখা হয়।'

    বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আইজুদ্দিন মণ্ডল বলেন, 'দু'টি ঘাটের মধ্যে নৌকা চলাচলের টেন্ডার হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে করা হয়।তবে নৌকাতে যাতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় জীবন রক্ষাকারী উপকরণ থাকে এবং নৌকাগুলো যাতে সাবধানে চলাচল করে সেই বিষয়ে আমরা হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতি এবং মাঝিদের সঙ্গে কথা বলব।'
  • Link to this news (আজকাল)