জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রবিবার রামনবমী। এনিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। একদিন আগে থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে রামনবমীর প্রস্তুতি মিছিল। কোথাও অস্ত্র হাতে, কোথাও ঝান্ডা নিয়ে বাইক বাহিনীর দাপাদাপি। বাজারে দেদার বিকোচ্ছে রাম ধ্বজা। এনিয়ে সতর্ক পুলিস। বেশ কয়েকটি এলাকাকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্য়বস্থার উপরে নজর রাখতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ২৯ জন আইপিএস অফিসারকে। মেতায়েন করা হচ্ছে মহিলা ব়্যাফও। নজরদারি করা হবে ড্রোনের সাহায্যেও।
শনিবার রামনবমীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে রাস্তায় নামেন পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নামলে কী করা হবে, কী করা হবে না হাইকোর্ট বলে দিয়েছেন। তাই এনিয়ে কিছু বলছি না। আদালতের আদেশ কেউ না মানলে আইন অনুযায়ী ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। মিছিলে যানবাহনের ব্যবহার নিয়েও হাইকোর্ট স্পষ্ট বলে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত কলকাতা পুলিসের তরফে জানানো হয়েছে যথেষ্ট সংখ্য়ায় পুলিস মোতায়েন করা হচ্ছে রামনবমী উপলক্ষ্যে। রামনবমীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে লালবাজারে আজ একটি বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সব কমিশনার ও ডিসিরা। ছিলেন আইপিএসরা।
ধর্মীয় উত্সব এখন রাজনৈতির ইস্যু হয়ে গিয়েছে। অশান্তির আশঙ্কা করছে প্রশাসন। হুঙ্কার দিচ্ছেন নেতারা। ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হচ্ছে। ছোট বড় মিলিয়ে এবার রাজ্যে প্রায় ২৫০০ মিছিলের আবেদন জমা পড়েছে। শুধুমাত্র কলকাতাতেই ৫৯টি মিছিলের অনুমতি রয়েছে। ময়দানে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে বিজেপি। ফলে সতর্ক থাকতে হচ্ছে প্রশাসনকে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কলকাতা-সহ মোট ১০টি পুলিস কমিশনারেট ও পুলিস জেলাকে স্পর্শকাতর বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ওইসব জায়গায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হবে। যেসব রাস্তা দিয়ে মিছিল যাবে সেইসব রাস্তার উপরে থাকা বহুতলগুলি থেকে মিছিলের উপরে নজরদারি চালানো হবে। বিশেষ করে হাওড়ায় নজর রাখা হয়েছে। কলকাতা পুলিসের তরফে প্রতিটি ডিভিসনে অতিরিক্ত ডিসি মোতায়েন করা হচ্ছে। বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে গুজবের উপরে।
সকালসকাল বিজেপির রাজ্য সভাপতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, মানুষ রাস্তায় বের হবেন। প্রশাসন কড়াকড়ির নামে যদি আটকানোর চেষ্টা করেন তাহলে তা ভালোভাবে নেবে না বঙ্গ বিজেপি। মানুষকে রাম নবমীর শোভাযাত্রায় যেতে বাধা দেওয়া যাবে না। ময়দানে পিছিয়ে নেই দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরাও। একাধিক জায়গা থেকে মিছিলে তাঁরা অংশ নেবেন। বারাসতে থাকবেন সুকান্ত মজুমদার নিজে। দিলীপ ঘোষ থাকবেন বেলদার মিছিলে। শুভেন্দু অধিকারী থাকবেন এন্টালি, ভবানীপুর-সহ একাধিক জায়গা থেকে মিছিল বের হবে সেখানে থাকবেন। ময়দান থাকছে বিশ্বহিন্দু পরিষদ, বজরং দল, অঞ্জনী সেনাও মিছিল বের করবে।
আগামিকাল রাম নবমীর শোভাযাত্রার জন্য সেজে উঠেছে ব্যারাকপুর। সেখামে বিজেপি, বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তাদের পতাকায় মুড়ে ফেলেছে বিভিন্ন জায়গা। সাঁকরাইলে রাম নবমীর প্রস্তুতি মিছিলে অস্ত্র হাতে দাপাদাপি লক্ষ্য করা গিয়েছে। উত্তেজনার পারদ চড়ছে অন্যান্য জায়গাতেও। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট রাজপথে শ্রীরাম চন্দ্রের মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রায় রামনবমী উৎসব উদযাপন সমিতির সনাতনীরা। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিসের অন্তর্গত যে ১৪ টি থানা রয়েছে তার মধ্যে ৪৯ টি রাম নবমীর পদযাত্রা সহকারে মিছিলে বের হবে, এছাড়াও ৭৪ টি রাম মূর্তি পুজো হবে। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিস সুপার রাহুল গোস্বামী এমনটাই জানান। রামনবমী উপলক্ষে পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভায়" জয় সিয়া রাম" লেখা পতাকা বিতরণ তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা সভাপতির । পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার সকল রামনবমী কমিটিগুলিকে আর্থিক সহায়তা ও "জয় সিয়া রাম "লেখা পতাকা বিতরণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ।