• দোকান থেকে সোনা হাতিয়ে ধৃত জুয়েলারি সংস্থার কর্মীরা
    বর্তমান | ০৬ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তাদের উপর দায়িত্ব ছিল সোনা রাখার ভল্ট দেখভালের। যাতে কোনও গরমিল না হয়। সেই সুযোগে ভল্ট থেকে  তিন কেজির বেশি সোনা হাতিয়ে ফেলেছিল তারা। সেগুলি বিক্রি করে পাওয়া টাকা বিনিয়োগ করা হয় শেয়ার বাজারে। কিন্তু অডিট রিপোর্ট আগে হয়ে যাওয়ায় ফাঁস হয়ে গেল সব। নামী দোকানের সোনা হাতিয়ে লালবাজারের হাতে গ্রেপ্তার হল চারকর্মী। শুক্রবার রাতে সকলকে বাড়ি থেকে ধরা হয়।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত দেবব্রত গঙ্গোপাধ্যায়, নবজ্যোতি দত্ত, প্রবীর চক্রবর্তী ও তাপস মাইতি কলকাতার একটি নামকরা সোনার দোকানে কাজ করত। তাদের দায়িত্ব ছিল নতুন ও পুরনো সোনা ভল্টে মিলিয়ে রাখা। অলঙ্কার তৈরির জন্য কারিগররা যে সোনা নিয়ে আসতেন তা তারাই হিসেব রাখত। তদন্তে জানা যাচ্ছে, কারিগরদের সোনা দেওয়ার পর সেখান থেকে বেশ কিছু সোনা সরিয়ে ফেলত অভিযুক্তরা। এভাবে বিগত দু’বছরের বেশি সময় ধরে তারা তিন কেজি দুশো গ্রামের বেশি সোনা সরিয়ে ফেলে। কিন্তু দোকানের অডিট চলার সময় দেখা যায়, খাতায়কলমে যে পরিমাণ সোনা বেরিয়েছে বলে দেখানো হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি সোনা চলে গিয়েছে। হিসেবে বড়সড় গরমিল রয়েছে। জুয়েলারি সংস্থার কর্ণধারের সন্দেহ হয়, ভল্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এরপরই অভিযোগ করা হয় লালবাজারে। 

    তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন সর্ষের ভিতর ভূত লুকিয়ে রয়েছে। বারবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলেও কর্মীরা না আসায় গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে। তদন্তকারীদের তারা জানায়, কারিগরদের দেওয়ার জন্য সোনা বের করার সময় তারা ভল্ট থেকে বাড়তি বিস্কুট বা পুরনো অলঙ্কার বের করে নিত। 

    এগুলি তারা বিক্রি করত সোনার চোরাকারবারে জড়িতদের কাছে। তাদের কাছে নগদ নেওয়ার পর নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিত। সেই টাকা শেয়ারে লগ্নি করেছিল। ধৃতরা তদন্তকারীদের জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে সোনার বিস্কুটের কারবার করে এমন ব্যবসায়ীদের পরিচয় ছিল। অডিটে যাতে গরমিল ধরা না পড়ে তাই ওই ব্যবসায়ীদের কাছে কয়েকদিনের জন্য সোনা ভাড়া নিয়ে ভল্টে রেখে দিত। অডিট হয়ে গেলে তা আবার ফিরিয়ে দিত। কিন্তু ২০২৪ অডিট যে নির্ধারিত সময়ের আগে হয়ে যাওয়ায় তারা সোনা রাখতে পারেনি। ওই অডিটেই গরমিল ধরা পড়ে যায়। ধৃতরা কোথায় কোথায় সোনা বিক্রি করে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)