• কড়া নজরদারিতে রাজ্যজুড়ে রামনবমী পালন, রবিবারেও খোলা নবান্নের কন্ট্রোল রুম
    এই সময় | ০৬ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: রামনবমীকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করল রাজ্য প্রশাসন।শুধুমাত্র কলকাতায় নিরাপত্তার জন্যই প্রায় ৬ হাজার পুলিশ কর্মীকে কাজে লাগাবে লালবাজার। রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কী কী নিয়ম মেনে চলতে হবে, এ বিষয়ে বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার এবং কমিশনাররা আয়োজকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। ওই সমন্বয় বৈঠকে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশিকা মেনে মিছিল করতে হবে।

    ইতিমধ্যেই কোচবিহার, চন্দননগর, হাওড়া, মালদা, মুর্শিদাবাদ, ইসলামপুর এবং শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকাকে উত্তেজনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সব জায়গার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ২৯ জন আইপিএসকে। রামনবমীর মিছিলগুলিতে নজরদারি করার জন্য রবিবারও নবান্ন খোলা থাকছে। ডিজি কন্ট্রোল রুম থেকে বিভিন্ন জেলায় নজর রাখা হবে। পুরো বিষয়টির দায়িত্বে থাকবেন এডিজি( আইন–শৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম সহ পুলিশকর্তারা।

    সূত্রের খবর, কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ৮০টি মিছিল হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সব মিছিলের শুরু এবং শেষে পুলিশি প্রহরা থাকবে। ড্রোন এবং বহুতল থেকেও নজরদারি চলবে। পাশাপাশি লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকেও মনিটর করবেন পুলিশকর্তারা। অশান্তি এড়াতে চেষ্টার কোনও রকম খামতি রাখতে চাইছে না লালবাজার। শনিবার শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে সিপি মনোজ ভার্মা বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমীর উৎসব পালন করুন। আইন না মেনে মিছিল করলে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে। সিসিটিভি এবং ড্রোনেও নজরদারি চলবে। কোথাও কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। সকলে শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমী পালন করুন।’

    রবিবার ছুটির দিন। এমনিতে সরকারি অফিস–কাছারি বন্ধ থাকে। তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত সংখ্যাক ট্র্যাফিক পুুলিশ রাস্তায় নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছে লালবাজার। জানা গিয়েছে, শহরে মোট ৫ জন যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার এবং দেড় হাজার পুলিশ ডিউটি করবেন। যে যে রুট দিয়ে মিছিল যাবে, সে সব এলাকার যান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ গাড়ি–বাইক নিয়ে বেরোলে দুর্ভোগে না পড়েন। প্রয়োজন অনুযায়ী বিকল্প পথেও গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হতে পারে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের জারি করা একটি নোটিফিকেশনে বলা হয়েছে, রামনবমীর পরের দিন অর্থাৎ সোমবার সকাল ছ’টা পর্যন্ত শহরের পণ্যবাহী লরি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

    অন্যদিকে, কলকাতা লাগোয়া হাওড়াতেও মিছিলকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও গোলমাল বা উত্তেজনা না হয় সে বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। হাওড়া এবং শিবপুরে দুটি বড় মিছিলে ১০টি ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। এছাড়া ২০০টি অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে রাস্তায়। ছ’জন আইপিএসকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেখানে। উত্তর চব্বিশ পরগনার ব্যারাকপুর কমিশনারেটও একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। জানা গিয়েছে, স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে কামারহাটি, জগদ্দল, ভাটপাড়া, টিটাগড় এবং হাজিনগরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। জগদ্দল-ভাটপাড়ায় প্রতিটি মিছিলে ড্রোন নজরদারি ছাড়াও বাড়ির ছাদ থেকে পুলিশ নজরদারি রাখবে।

    কলকাতার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের মধ্যে শিলিগুড়ি এবং কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত তিনজন আইপিএস–কে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে পাহাড়ে পাঠানো হয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)