• ‘...বুক কাঁপলে আজ রাস্তায় বেরোবেন না, হার্ট অ্যাটাক হতে পারে’, ফের ‘চমকালেন’ দিলীপ
    এই সময় | ০৬ এপ্রিল ২০২৫
  • গত এক, দু’সপ্তাহ থেকেই তিনি ‘গর্জাচ্ছিলেন’। ‘রামনবমীতে কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে মাড়িয়ে চলে যাবে’, ভেসে আসছিল এই সমস্ত হুঁশিয়ারি। রবিবার রামনবমীর দিনে দিলীপ ঘোষের ভূমিকা ঠিক কী হবে? সেই দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের একাংশের। ২০২৩ সালে তিনি হাতে গদা নিয়ে মিছিল করেছিলেন খড়্গপুরে। ২০২৪-এর রামনবমী কেটেছিল লোকসভা ভোটের আবহে। বিধানসভা ভোটের এক বছর আগে ‘ঘরের মাঠ’ মেদিনীপুরে রামনবমীর দিন সকালে বাইক হাঁকিয়ে মিছিল করলেন দিলীপ ঘোষ। মাথায় গেরুয়া পাগড়ি, চোখে কালো সানগ্লাস, রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির এই রূপ রাজনীতিতে তাঁর ঝাঁঝালো ‘কামব্যাক’-এর ইঙ্গিত? প্রশ্ন দলের ভিতরে-বাইরে।

    ওয়াকিবহাল মহলের কথায়, ‘লোকসভায় মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে অচেনা মাঠে খেলতে পাঠানো হয়েছিল দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু সেখানে তাঁকে ‘ক্লিন বোল্ড’ করে জনতা। এর পর থেকেই ধীরে ধীরে বঙ্গ বিজেপি-র ফ্রেম থেকে তিনি সরছিলেন। তবে সম্মুখে যখন রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি ঘোষণার কথা, সেই সময় ফের চাঙ্গা দিলীপ। রামনবমীর আগে নরমে-গরমে বার্তাও দিয়েছিলেন।’

    রবিবার সকালে গোপনন্দিনী মন্দিরে রামনবমীর পুজোতে যোগ দিয়ে বুলেট হাঁকিয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া বাজারে পৌঁছে যান দিলীপ। তবে তার আগে মর্নিং ওয়াকের সময়েই তিনি হুঙ্কার দিয়েছিলেন, ‘জয় শ্রীরাম বললে যাঁদের বুক দুড়দুড় করে, তাঁরা আজ রাস্তায় বার হবেন না। হার্ট অ্যাটাক করতে পারে। কারণ সারা সমাজ আজ জয় শ্রীরাম বলছে। আর তা প্রতি বছর বাড়ছে। সবটাই রামের ইচ্ছেতেই হচ্ছে, হবেও।’

    দিলীপের এই বক্তব্যকে অবশ্য আমল দিতে নারাজ রাজ্যের শাসক দল। তাঁদের কটাক্ষ, ‘ওঁর কথাবার্তা নিয়ে তো তাঁরই দলকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে অতীতে। একাধিক উদাহরণ রয়েছে। এখন তিনি দলের কোনও পদে নেই। তাই লাইমলাইটে থাকার জন্য এ সব বলছেন। সহানুভূতি রইল।’

    দিলীপের পাল্টা তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ হয়তো জানেন না, মেদিনীপুর শহরে রামনবমীর সবথেকে বড় আখড়া যারা বার করে, সেই ক্লাবের (সুভাষ সঙ্ঘ ব্যায়ামাগার)-এর সভাপতি তৃণমূলের জেলা সভাপতি। তিনি রাজনীতিতে আসার অনেক আগে থেকে মেদিনীপুরে রামনবমী পালিত হয়। রামনবমী পালনের জন্য বিজেপি বা আরএসএস করার প্রয়োজন নেই। রাম মানুষের অন্তরে রয়েছেন।’

    দিলীপকে বিঁধেছেন পিংলার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতিও। তিনি কটাক্ষের সুরেই বলেন, ‘রাম কি দিলীপবাবুর পৈত্রিক সম্পত্তি? বাংলার শান্তিপ্রিয় মানুষ অনেক আগে থেকে রামনাম জপ করছেন। আজও করেন, ভবিষ্যতেও করবেন। বরং এই নিয়ে যাঁরা অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের অচিরেই বিনাশ হবে।’

    (তথ্য সহায়তা: মণিরাজ ঘোষ)

  • Link to this news (এই সময়)