• কিশোরীর মরণোত্তর অঙ্গদানে নবজীবন তিন প্রাণের
    এই সময় | ০৬ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: ১৫ বছরের প্রাণচঞ্চল স্কুল পড়ুয়া। কিন্তু তার মাথায় বাসা বেঁধেছিল মারণ টিউমার। এক সময়ে সেই টিউমারের জন্য অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল করতে করতে সবটুকু প্রাণশক্তি খুইয়ে কোমায় চলে যায় ফুটফুটে মেয়েটি। সবরকম চিকিৎসার পরেও কোনও উন্নতি হয়নি। অচেতন হয়ে আর জ্ঞান ফেরেনি তার।

    শুক্রবার সিএমআরআই হাসপাতালে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয় একরত্তির। সন্তান হারানোর এই বিষন্নতার মাঝেও সামাজিক কর্তব্যবোধের অনন্য নজির গড়লেন তার বাবা-মা। মরণোত্তর অঙ্গদানের জন্য সম্মতি দেন মৃত্যুর পরেই। ওই কিশোরীর দান করা অঙ্গে কার্যত নবজীবন পেলেন তিনটি বেসরকারি হাসপাতালের তিন জন রোগী। নতুন দৃষ্টি পেলেন আরও দু’জন। কিশোরীর পরিবারের এমন সিদ্ধান্তে বাকরুদ্ধ সিএমআরআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবারেই খড়দহের মৃত কিশোরীকে গার্ড অফ অনার দিয়ে সম্মান জানায় তারা।

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কিশোরীর মস্তিষ্কে টিউমারের চিকিৎসা চলছিল একটি ছোট হাসপাতালে। কিন্তু অবস্থা তাদের আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ায় ২৮ মার্চ তাকে সিএমআরআই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসাতে আর সাড়া দেয়নি সে। শেষ পর্যন্ত ৪ এপ্রিল, শুক্রবার তার ব্রেনডেথ ঘোষণা করা হয়। মেয়েকে হারিয়ে ততক্ষণে দিশেহারা অবস্থা পরিবারের। কিন্তু তার মধ্যেও মেয়ের মরণোত্তর অঙ্গদানে সম্মতি জানায় পরিবার।

    এর পরেই শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে যোগাযোগ করে সিএমআরআই কর্তৃপক্ষ। তার হৃদযন্ত্র পেয়েছেন মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক রোগী। একটি কিডনি পেয়েছেন কমান্ডো হাসপাতালের এক রোগী। দ্বিতীয় কিডনিটি প্রতিস্থাপিত হয়েছে মুকুন্দপুর মণিপাল হাসপাতালের এক রোগীর শরীরে। এসএসকেএম-এ একজন গ্রহীতার সঙ্গে রক্তের গ্রুপ মিলে গেলেও সেই রোগীর অবস্থা অস্ত্রোপচারের মতো নয় বলে যকৃৎটিকে কাজে লাগানো যায়নি। কর্নিয়া গিয়েছে এমপি বিড়লা হাসপাতালে।

  • Link to this news (এই সময়)