• রামনবমীতে মিষ্টি-জল বিলি সংখ্যালঘুদের, সম্প্রীতির শোভাযাত্রায় ‘বেঙ্গল মডেল’!
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৬ এপ্রিল ২০২৫
  • রামনবমীর আবহে বাংলাজুড়ে উঠে এল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি। একদিকে - মালদা থেকে বীরভূম - রাজ্যের নানা প্রান্তে রামনবমীর মিছিলে পুষ্পবৃষ্টি এবং তাতে অংশগ্রহণকারীদের জল ও মিষ্টি বিতরণ করলেন সংখ্য়ালঘু বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা, অন্যদিকে - কলকাতায় আয়োজিত একটি শোভাযাত্রায় সংখ্যাগুরুদের সঙ্গেই পা মেলালেন সংখ্যালঘুরাও। আপাদমস্তক গোলাপী পোশাক পরে সেই শোভাযাত্রার অগ্রভাগে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষকে। তিনি বললেন - সম্প্রীতির এই ছবিই আসলে 'বেঙ্গল মডেল'।

    দিন কয়েক আগেও মালদার মোথাবাড়ি-সহ রাজ্যের নানা প্রান্ত অশান্ত হয়ে ওঠে মূলত দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে। সেই ঘটনাক্রম পিছনে ফেলে সদ্য পালিত হয় খুশির ইদ। আর আজ সারা দেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও মহা ধুমধামের সঙ্গে পালিত হল রামনবমী। দূরত্ব, বিভেদ ঘুচিয়ে কাছাকাছি এল, পাশাপাশি থাকার বার্তা দিল বাংলার সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশ।

    মালদার 'আটকোশী আঞ্জুমান আকবারিয়া ইসলামিয়া শহর মুসলিম কমিটি'র পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, রামনবমী উপলক্ষে তারা বিশেষ কিথু আয়োজন করছে। সেই মতোই জেলার বিভিন্ন জায়গায় রীতিমতো তাঁবু খাটিয়ে রামনবমীর মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানোর জন্য একাধিক ব্যবস্থা করেছিলেন কমিটির সদস্যরা।

    এদিন রাজ্যে গরমের দাপট ছিল ভালোই। ফলে মিছিলে হাঁটতে গিয়ে যাতে কেউ অসুস্থ বোধ না করেন, তাই মালদা জেলার নানা প্রান্তে সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য যেমন মিষ্টিমুখ করানোর এবং শরবত ও পানীয় জল সরবরাহের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল, তেমনই বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্য শিবিরেরও আয়োজন করা হয়েছিল। এমনকী, বহু জায়গায় রামনবমীর মিছিলে পুষ্পবৃষ্টিও করা হয়।

    সম্প্রীতির একই চিত্র দেখা গিয়েছে, লালমাটির জেলা বীরভূমেও। সেখানকার রামপুরহাটে রামনবমীর মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের জন্য পানীয় দল ও মুখ মিষ্টির নানা আয়োজন করা হয় সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে।

    এদিকে, এমন দৃশ্য দেখে আপ্লুত রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রামনবমীর মিছিলে জল ও মিষ্টি বিলি করা হচ্ছে দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন এবং এগিয়ে গিয়ে নিজেও জল ও মিষ্টি খান।

    অন্যদিকে, কলকাতায় আয়োজিত একটি সম্প্রীতির শোভাযাত্রায় নজর কাড়েন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। এদিন তাঁর পরনে ছিল - গোলাপি শার্ট-প্যান্ট, গলায় উত্তরীয়র মতো করে জড়ানো ছিল চেলি কাপড়, আর মাথায় ছিল গোলাপি পাগড়ি!

    এদিন কলকাতার প্রসিদ্ধ ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি থেকে একটি শোভাযাত্রা শুরু করা হয়। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল - রামনবমীর দিনে আয়োজিত এই মিছিলে যেমন - রাম, সীতা, হনুমানের সাজে সংখ্যাগুরুরা সামিল হয়েছিলেন, তেমনই অসংখ্য সংখ্যালঘু মানুষও ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে সানন্দে এই শোভাযাত্রায় হাঁটবেন বলে চলে এসেছিলেন।

    সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে এই আয়োজন সম্পর্কে কুণাল বলেন, 'এটা সম্প্রীতির শোভাযাত্রা। মুসলমানদের পবিত্র ইদে আমরাও সামিল হয়েছি। রামনবমীর শোভাযাত্রায় মুসলমানরাও সামিল হচ্ছেন। ধর্মীয় শোভাযাত্রা সব ধর্মের আলাদা হতেই পারে। কিন্তু উৎসব সবার। এটাই বেঙ্গল মডেল। এটাই বাংলার সংস্কৃতি।'
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)