• সহকর্মী গেলেও চা খেতে যাননি সৌমেন, গোডাউনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু যুবকের
    এই সময় | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
  • বিকেলে ঘুম থেকে উঠে চোখে মুখে জল দিয়ে চা খেতে যাওয়ার তোড়জোড় করছিলেন সৌমেন। সহকর্মী চা খেতে চলে যান। সৌমেন রয়ে গিয়েছিলেন কারখানায়। ক্ষণিকের বিলম্ব কেড়ে নিল উলুবেড়িয়ার তরতাজা যুবকের প্রাণ। হাওড়ার সাঁকরাইলে থাৰ্মকলের গোডাউনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের জেরে প্রাণ গিয়েছে সৌমেন হাজরার (১৮)। সৌমেনের মরটিতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। 

    প্রতিদিনের মত শনিবার সকালেও কাজে বের হওয়ার সময় ছেলে বলে গিয়েছিল কাজ শেষ হলে বাড়ি ফিরে আসবে। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ার পর ছেলে বাড়ি না ফেরায় দুশ্চিন্তা বাড়ছিল উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের তুলসীবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা তাপসী হাজরার। যদিও তখনও বুঝতে পারেননি তার জন্য এতবড় দুঃসংবাদ রয়েছে। রাতেই পঞ্চায়েত প্রধান মহসিন মোল্লার কাছে থেকে ছেলের মৃত্যু সংবাদ শোনার পর থেকেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবারের। কান্নার রোল উঠেছে এলাকায়। একমাত্র উপার্জনকারী ছেলের মৃত্যুর পর কী ভাবে সংসার চলবে সেই চিন্তায় দিশেহারা পরিবারের লোকজন। 

    স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর আটেক আগে সৌমেনের বোনের মৃত্যু হয়। বছর খানেক আগে প্রয়াত হন বাবাও। মা, দাদু, দিদাকে নিয়ে থাকতেন সৌমেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী তিনিই। পরিবারের দাবি, সৌমেন একটা ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতেন। দিন ১৫ আগে থেকে সৌমেন এবং তাঁর এক বন্ধু আলমপুরে থার্মোকলের গোডাউনে কাজ শুরু করেন। 

    স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, শনিবার দুপুরে কাজের শেষে খাওয়া দাওয়া সেরে দুই বন্ধুতে কিছুটা বিশ্রাম নেন। বিকেলে ঘুম থেকে উঠে মুখে জল দিয়ে চা খেতে যাওয়ার সময় সৌমেনের বন্ধু আগে দোকানে গেলেও সৌমেন যেতে কিছুটা করেন। তার পরেই এই পরিণতি। অন্যদিকে এদিন রাতেই মৃত সৌমেনের বাড়িতে যান তুলসীবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহসিন মোল্লা এবং উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের বিডিও। মহসিন মোল্লা জানান, সৌমেনের মৃত্যুতে গোটা পরিবার অথৈ জলে পড়ে গেল। আমরা পরিবারের পাশে আছি।

  • Link to this news (এই সময়)