• ইন্ডোরে বৈঠক, ময়দানে কাটল ‘চাকরিহারা’দের বিনিদ্র রজনী
    এই সময় | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
  • মাথার উপর নিকষ, কালো আকাশ। ওই অন্ধকার আকাশে ইতিউতি জেগে থাকা ছোট ছোট আলোর বিন্দুগুলোই দেখাচ্ছে দিশা। এমনই এক চিলতে আলোর খোঁজেই নয়া লড়াই। খোলা আকাশের নীচে শুয়ে ওই অন্ধকার আকাশটাকে দেখেই সোমবারের কঠিন লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাত নেমে এলেও ঘুম নেই চোখে। শীর্ষ আদালতের রায়ে একধাক্কায় ‘কর্মহীন’ ২৫,৭৫২ জন। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের আগে ময়দানেই বিনিদ্র রাত কাটল চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকারা।

    রাতারাতি বিনা দোষে চাকরি খুইয়ে বেকার ওঁরা। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। কিন্তু কেন কোনও অপরাধ না করেও এমন পথে বসতে হলো ওঁদের? কী হবে ওঁদের ভবিষ্যৎ? হারানো চাকরি ফেরত চেয়ে সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন চাকরিহারা প্রার্থীরা। তার আগে ময়দানে শহিদ মিনারের পাদদেশে মিলল খণ্ড চিত্র। ১০ বছর বাদে আচমকা চাকরিহারা। এ ভাবে চাকরি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অকূল পাথারে গোটা পরিবার। এর সমাধান খুঁজতে তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া, কন্যা আরাধ্যা সেনকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় মুর্শিদাবাদ ধুলিয়ানের সুমনা দাস। ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে নাম ছিল তাঁর। তিন দিন আগে পর্যন্ত ধুলিয়ান বানীচাঁদ আগরওয়াল বালিকা বিদ্যালয়ে অঙ্কের শিক্ষিকার ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবারের রায়ে আর সকলের মতো তাঁর চাকরিটাও নেই হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের ময়দানেই রাত কাটল মা-মেয়ের। মায়ের লড়াইয়ে সামিল খুদে কন্যার গায়ে চাদর টেনে চোখ মুছে সুমনা বললেন, ‘দেখা যাক কী হয়! সবই তো হারিয়ে ফেলেছি।’

    শুধু সুমনা নন, জবাব চাইতে হাজির আরও কয়েকশো শিক্ষক-শিক্ষিকা। চাকরিহারা প্রার্থীদের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘যোগ্যতার নিরিখে প্রাপ্ত চাকরি আমাদের ফিরিয়ে দিতে হবে আমাদের। এই রায় মানতে পারছি না।’ একইসঙ্গে তাঁদের হুঁশিয়ারি এর সমাধান না হলে আরও ভয়ঙ্কর পথে হবে আন্দোলন, জানালের চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সমাবেশ রয়েছে চাকরিহারা প্রার্থীদের যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের।

  • Link to this news (এই সময়)