ইঞ্জিন লাগানো বিছানা রাস্তায় চালিয়ে রাতারাতি ‘ভাইরাল’ হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের নবাব শেখ। পুলিশের দাবি, মোটর ভেহিক্যাল অ্যাক্ট অনুযায়ী ওই শখের গাড়ি রাস্তায় চালানোর উপযুক্ত নয়। সেই ‘বিছানা গাড়ি’ বাজেয়াপ্ত করল ডোমকল থানার পুলিশ। ৫ এপ্রিল পুলিশ ওই ‘বিছানা গাড়ি’ বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে ওই ইঞ্জিন লাগানো গাড়ি আর পাঁচটা গাড়ির মতো পড়ে রয়েছে ডোমকল থানা চত্বরে।
ডোমকল মহকুমা পুলিশ অফিসার শুভম বাজাজ বলেন, ‘মোটর ভেহিক্যাল অ্যাক্ট মেনে ওই গাড়ি তৈরি হয়নি। ফলে সব দিক খতিয়ে দেখে ওই গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে ডোমকল থানায় নিয়ে এসে রাখা হয়েছে।’ উল্লেখ্য, দেড় বছরের পরিশ্রম এবং ২ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ‘বিছানা গাড়ি’ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ডোমকলের ওই যুবক। কিন্তু ভাইরাল হওয়ার গেরোয় পড়ে তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল সাময়িক ভাবে বন্ধ। এ বার বন্ধুর গুদামে রাখা ‘শখের গাড়ি’ শাটার খুলে ডোমকল থানার পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ওই ‘বিছানা গাড়ি’ নির্মাণের কাজ শুরু করেন নবাব। ইদের দিন সেই চলন্ত খাট রাস্তায় নামাতেই মুহূর্তের মধ্যে তা ‘সুপার হিট’। তবে বাংলাদেশের কয়েকজন যুবক তাঁর তোলা ওই ভিডিয়ো নিজেদের দাবি করে কপিরাইট আইন ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছিলেন। তার জেরে নবাবের ফেসবুক প্রোফাইল সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নবাব বলছেন, ‘একেই বোধহয় বলে মরার উপর খাঁড়ার ঘা। ফেসবুক সাময়িক ভাবে বন্ধ। তার উপরে বিছানা গাড়ি তুলে নিয়ে চলে গিয়েছে পুলিশ। আমার এখন আফসোসের শেষ নেই। জমানো যা টাকাপয়সা ছিল, সব শেষ করে ফেলেছি ভাইরাল হওয়ার চক্করে। এখন আমার মন খারাপ করা ছাড়া কিছুই করার নেই।’
টাকা-পয়সার টান আসতেই ভাইরাল হওয়ার বাসনা ছেড়ে নিজের পেশায় মন দিতে শুরু করেছেন নবাব। তাঁর বক্তব্য, ‘নিজের শিল্পীসত্ত্বা দিয়ে এমন একটা গাড়ি তৈরি করে ভাবলাম সরকার বা প্রশাসন আমার পাশে থাকবে। বাংলার নাম উজ্জ্বল করলাম। কিন্তু তার বদলে কিছুই পেলাম না। ভুল হয়ে থাকলে শুধরে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে গাড়িটাই বাজেয়াপ্ত করা হলো।’ ওই গাড়ি বানাতে বাজারে ধার-দেনা হয়েছে। তা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সোমবার থেকে নিজের মারুতি ভ্যান গাড়িতে পড়ুয়াদের তুলে স্কুল পৌঁছে দেওয়ার কাজ করবেন। বাড়ি থেকেও এমনই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।