• ‘সুস্থ না হলে বক্সী জেঠুকে ছাড়বেন না’, সুব্রতর অপারেশন, ডাক্তারকে ফোন অভিষেকের!
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
  • 'উনি দু'দিন পরই বলবেন, তৃণমূল ভবনে যেতে হবে। এই কাজ রয়েছে, ওই কাজ রয়েছে। কিন্তু, কোনও কথা শুনবেন না। সম্পূর্ণ সুস্থ না হলে বক্সী জেঠুকে ছাড়বেন না!' সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এই মন্তব্যটি যিনি করেছেন বলে জানা গিয়েছে, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে, 'বক্সী জেঠু' হলেন - দলেরই রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। এবং যাঁকে এই সমস্ত কথা বলা হয়েছে, তিনি কলকাতার একটি নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসক।

    দ্য ওয়াল - অনুসারে, সম্প্রতি ওই বেসরকারি হাসপাতালে মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচার করান প্রবীণ তৃণমূল নেতা সুব্রত বক্সী। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এদিকে, সুব্রত আবার দলের তরফে রাজ্যসভার সাংসদ।

    এরই মাঝে ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে বিতর্ক ও ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ করার জন্য তৃণমূল নেতৃত্ব দলীয় সাংসদদের উদ্দেশে হুইপ জারি করে। কিন্তু, অস্ত্রোপচার হওয়ায় হুইপ জারি সত্ত্বেও সুব্রত সংশ্লিষ্ট দিনগুলিতে রাজ্যসভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। নিজের অপারগতার কথা তিনি দলকে জানান এবং দলও এই বিষয়ের গুরুত্ব বুঝে তাঁর অনুপস্থিতিতে স্বীকৃতি দিয়ে দেয়।

    ইতিমধ্য়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের যে বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসক সুব্রত বক্সীর অস্ত্রোপচার করেছেন, তাঁকে সরাসরি ফোন করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, 'উনি দু'দিন পরই বলবেন, তৃণমূল ভবনে যেতে হবে। এই কাজ রয়েছে, ওই কাজ রয়েছে। কিন্তু, কোনও কথা শুনবেন না। সম্পূর্ণ সুস্থ না হলে বক্সী জেঠুকে ছাড়বেন না!'

    সূত্রের দাবি, এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের অন্দরে এক নয়া রসায়ন নিয়ে নাকি চর্চা শুরু হয়েছে। এই চর্চা - নবীন বনাম প্রবীণের লড়াই নয়। বরং, এ হল - নবীন ও প্রবীণের একজোট হয়ে এগিয়ে চলার সিদ্ধান্ত!

    নিন্দুকেরা বলেন, তৃণমূলের অন্দরে নাকি মমতাপন্থী বনাম অভিষেকপন্থীদের মধ্য়ে বিস্তর বিবাদ রয়েছে। মমতাপন্থীরা বয়সে প্রবীণ এবং অভিষেকপন্থীরা বয়সে নবীন - এমন দাবিও করা হয়। কিন্তু, সম্প্রতি দলের অন্যতম প্রবীণ, প্রথম সারির এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিশেষ আস্থাভাজন নেতা সুব্রত বক্সীর সঙ্গে তরুণ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মধ্যে যে সমন্বয় দেখা গিয়েছে, তা সকলেরই নজর কেড়েছে।

    যদিও 'ভূতুড়ে ভোটার' সংক্রান্ত প্রথম বৈঠকে কেন সুব্রতর নেতৃত্বাধীন বৈঠকে অভিষেক ছিলেন না, এমন প্রশ্নও উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, সেই বৈঠকের কিছুদিনের মধ্যেই অভিষেকের নেতৃত্বে বিরাট আকারের ভার্চুয়াল বৈঠক করা নিয়ে। আবার এটাও ঠিক যে - সেই ভার্চুয়াল বৈঠক পাশাপাশি বসে পরিচালনা করেছেন অভিষেক ও সুব্রত।

    তথ্য়াভিজ্ঞ মহলের একাংশ মনে করছেন, যেখানে বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র বছর খানেক বাকি, সেখানে নবীন-প্রবীণ ইস্যুতে মমতা নিজেই আর কোনও দ্বন্দ্ব দলের অন্দরে চান না। সম্ভবত, সেই কারণেই তিনি অভিষেক ও সুব্রতর মধ্যে একটা ভারসাম্য তৈরি করে দিয়েছেন। যা নিজেদের মতো করে পালন করে চলেছেন অভিষেক-সুব্রতও। সুব্রতর স্বাস্থ্য নিয়ে অভিষেকের এই ফোনও সেই বার্তাই দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)