মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে ‘অযোগ্য়’রা ঢুকলেই বৈঠক বানচাল করে দেব! হুঁশিয়ারি ‘যোগ্য’দের!
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
আর মাত্র কিছু ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সদ্য চাকরি হারানো সরকারি স্কুল শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষক কর্মচারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকের নিট ফল কী হবে, জানা নেই। কিন্তু, বৈঠক ঘিরে ইতিমধ্যেই পারদ চড়তে শুরু করেছে। যার কেন্দ্রে রয়েছে 'যোগ্য বনাম অযোগ্য' বিতর্ক। 'যোগ্য'রা বলছেন, 'অযোগ্য'রা নেতাজি ইন্ডোরে এলে বৈঠকই বানচাল করে দেওয়া হবে!
একথা ঠিক যে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চলাকালীনই সামনে এসেছিল, যাঁরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সময়ে রাজ্য সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই ন্যায্য পথে চাকরি পেয়েছেন। অথচ, শীর্ষ আদালত এই যোগ্য এবং অযোগ্যদের মধ্যে ফারাক করতে পারেনি বলেই এসএসসি-র তৈরি করা ২০১৬ সালের প্রায় পুরো প্যানেলটিই বাতিল করে দিয়েছে!
আর, এখানেই প্রশ্ন তুলছেন চাকরিহারারা। তাঁদের যুক্তি, সিবিআই তদন্তের মাধ্যমে অসংখ্য নথি উদ্ধার করা হয়েছে। যেখানে সম্ভাব্য দুর্নীতিবাজদের নাম আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের শুধু চাকরিই যায়নি, সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের বেতনও ফেরত দিতে বলেছে। যাঁরা ফাঁকা উত্তরপত্র জমা দিয়েছেন, যাঁরা প্য়ানেল বহির্ভূতভাবে চাকরি পেয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে বাকিদের কেন গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলছেন নিজেদের 'যোগ্য' বলে দাবি করা চাকরিহারা।
ইতিমধ্যেই আলাদা মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলনে নেমেছেন এই 'যোগ্য' চাকরিহারারা। সেই মঞ্চের নাম - 'যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ ২০১৬'। রবিবার সন্ধ্য়ায় শহিদ মিনারের পাদদেশের বিক্ষোভ মঞ্চে তাঁরা একজোট হন। জানান, তাঁরা অবশ্যই সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এমনকী এর জন্য বিশেষ 'পাস'-এরও বন্দোবস্ত করেছেন তাঁরা।
একইসঙ্গে 'যোগ্য' চাকরিহারাদের পক্ষ থেকে সোমবারের এই বৈঠক নিয়ে হুঁশিয়ারিও শোনা গিয়েছে। তাঁদের সাফ কথা, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত হতে চলা ওই বৈঠকে যদি 'অযোগ্য' চাকরিহারারা থাকেন, তাহলে 'যোগ্য'রা তখনই বৈঠক বানচাল করে দেবেন!
এছাড়াও, 'যোগ্য' চাকরিহারারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাঁদের সমস্যা না মিটলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কোনও রাজনৈতিক দলকেই ভোটে দাঁড়াতে দেবেন না। পাশাপাশি, তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে গণ-আত্মহত্যা করারও অনুমতি চাইবেন বলে জানিয়েছেন।
'যোগ্য' চাকরিহারা বস্তুত কোনও রাজনৈতিক দলকেই তাঁদের রুজিরুটি হারানো নিয়ে রাজনীতি করতে দিতে রাজি নন। তাঁরা যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার সমালোচনা করছেন, আবার প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাও করতে চাইছেন। অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা যে তাঁদের পাশে আছেন, সেকথা যেমন বলছেন, তেমনই প্রশ্ন তুলছেন - ৫০০ বছর আগে কী হয়েছিল, তা মাটি খুঁড়ে জেনে যাচ্ছে সরকার, আর পাঁচবছর আগে কী ঘটেছিল, তা শীর্ষ আদালতে তা প্রমাণ করা যাচ্ছে না?