চাকরি যেতেই উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা ফেরানোর হিড়িক জেলায়, কোন শিক্ষক দেখবেন উত্তরপত্র, চিন্তায় শিক্ষাকর্তারা
বর্তমান | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, বালুরঘাট: অভূতপূর্ব সমস্যা! সুপ্রিম রায়ে শিক্ষকদের চাকরি চলে যাওয়ার পর চরম দুশ্চিন্তায় শিক্ষা দপ্তর। বিভিন্ন স্কুলে পঠনপাঠন কীভাবে চলবে তা নিয়ে সমস্যা তৈরি হওয়ার মাঝেই নতুন জট দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের খাতা ফেরত দিচ্ছেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ফলে নতুন করে পরীক্ষার্থীদের খাতা কারা দেখবেন, সময়ের মধ্যে খাতা দেখা শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ১৬ এপ্রিলের মধ্যে খাতা দেখে জমা দেওয়ার শেষ তারিখ বলে সংসদ সূত্রে খবর। তারপর নম্বর ফের খতিয়ে দেখে পোর্টালে আপলোড হওয়ার কথা। এখন সেই সময় বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে খবর। চাকরিহারা শিক্ষক সন্তু সরকারের কথায়, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। সেজন্য খাতা জমা দিয়ে দিয়েছি।
তবে, আশার আলো বলতে অসহায় অবস্থার মাঝেও শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীদের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে অনেকে খাতা দেখার কাজ শেষ করতে চাইছেন। তাঁদের সাফ কথা, আচমকা চাকরি হারালেও যে পড়ুয়াদের জন্য এতদিন পরিশ্রম করেছি, তাদের সমস্যায় ফেলে চলে যাব না। খাতা জমা দেওয়ার পরই আমাদের দায়িত্ব শেষ হবে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের খাতা দেখা সম্পূর্ণ হলেও সমস্যা উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে। সূত্রের দাবি, উচ্চ মাধ্যমিকে এখনও সব বিষয়ের খাতা দেখা শেষ হয়নি। চাকরিহারা শিক্ষকদের কাছে কয়েক হাজার খাতা পড়ে রয়েছে। সেই খাতা অবিলম্বে ফেরত দিয়েছেন ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রেজ়াল্ট যাতে সময় মতো দেওয়া যায়, সেজন্য হেড এগজ়ামিনারদের সেই খাতা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। এমন সময়ে কর্মরত শিক্ষকরা নারাজ অন্য শিক্ষকদের খাতা দেখতে। খাতা দেখার ক্ষেত্রে প্রত্যেক সার্কেলে একজন শিক্ষকের কাঁধে দায়িত্ব থাকে। তাঁর কাছেই মূলত খাতা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার আধিকারিক রেজাউল করিম বলেন, চাকরি চলে গিয়েছে এমন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের খাতা রয়েছে। অনেকে ফেরত দিচ্ছেন। কয়েকজন আবার খাতা দেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা চিন্তাভাবনা শুরু করেছি অন্যদের সেই খাতা দেখার জন্য নির্দেশ দেব।
এই অবস্থায় উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যত্ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তাদের খাতা এখন কতটা মন দিয়ে দেখা হবে, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। তবে খাতা কাদের দিয়ে দেখানো হবে। সংসদ থেকে এবিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। হিলির এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ঋক মহন্তর কথায়, এখন বুঝতে পারছি না সময়ে আমাদের রেজাল্ট বের হবে কি না। এত জটিলতার মাঝে তাড়াহুড়োয় খাতা ঠিকমতো দেখা হবে কি না, সেটা নিয়েও চিন্তা হচ্ছে।