• সঞ্চিতার হাতে তৈরি কার্পেট কিনতে লন্ডন থেকে কুশমণ্ডিতে অ্যাগনেস
    বর্তমান | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর: সঞ্চিতার হাতে তৈরি কার্পেট কিনতে লন্ডন থেকে কুশমণ্ডিতে অ্যাগনেস। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখে ইংল্যান্ড নিবাসী এসে পড়লেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডির প্রত্যন্ত গ্রাম ঊষাহরণে। সেখানকার এক বধূ সঞ্চিতা সরকার দীর্ঘদিন পাট ও কটনের সুতো দিয়ে নানা ধরনের কার্পেট ও ব্যাগ তৈরি করছেন। 

    জেলার এই বধূর হাতের কাজ বিদেশেও জনপ্রিয়। সঞ্চিতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এর আগে তিনি ভিয়েতনামেও নিজের হাতে তৈরি নানা জিনিস পাঠিয়েছেন। লন্ডন নিবাসী অ্যাগনেস কার্পেট অর্ডারের পাশাপাশি একটি ব্যাগও নিয়েছেন। বছর পঁয়তাল্লিশের বধূ সঞ্চিতার হাতের কাজ সামনে থেকে দেখে অবাক। অ্যাগনেসের প্রতিক্রিয়া, ভিডিওতে এই শিল্পীর কাজ দেখেছি। আজ সরাসরি দেখলাম। পড়াশোনা না জেনেও এত সুন্দর কাজ করা যায়, ভাবনার বাইরে। 

    নিঃশব্দে জেলার বুকে ‘বিপ্লব’ করে চলেছেন কুশমণ্ডির রাজবংশী সম্প্রদায়ের এই বধূ। বংশপরম্পরায় ধোকড়া তৈরির কাজ শিখেছিলেন মায়ের কাছ থেকে। এখন পাটের ধোকড়া আর সেরকম বিক্রি হয় না। বাড়িতে বসেই সঞ্চিতা এখন পাট ও কটনের সুতো দিয়ে তৈরি করছেন মহিলাদের হ্যান্ডব্যাগ, রাগ ম্যাট, কুশন কভার, ফ্লোর ম্যাট, ডোর ম্যাট, টেবিল রানার, বেড রানার, ওয়াল হ্যাঙ্গিং সহ গৃহসজ্জার বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর জিনিস। সঞ্চিতাকে কাজে সাহায্য করেন তাঁর ছেলে। সঞ্চিতার স্বামী কৃষিকাজ করেন।

    সরকারি বিভিন্ন মেলাতেও তিনি স্টল দেন। সঙ্গে তাঁর শিল্পকর্মও তুলে ধরেন। বর্তমানে কলকাতার একটি সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ম্যাট, ব্যাগ ও কার্পেটের অর্ডার পাচ্ছেন সঞ্চিতা। 

    সঞ্চিতা জানান, স্থানীয় হাটে কটনের সুতো ও বাড়িতে তৈরি করা পাটের সুতো দিয়ে ম্যাট ও ব্যাগ তৈরি করছেন। তা বিক্রি করে যা উপার্জন হচ্ছে, তা  সংসারের পিছনেই চলে যাচ্ছে। নতুন সেলাই মেশিন কিনে যে কাজটি বড় পরিসরে করবেন তার উপায় নেই। স্বাবলম্বী হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর অর্থনৈতিক অবস্থা। অনেকদিন ধরে তাঁর সেলাই মেশিন খারাপ। হাতে সেলাই করে অর্ডার অনুযায়ী জিনিস বানিয়ে সাপ্লাই দিচ্ছেন। 

    সঞ্চিতা বলেন, অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার কাজ দেখে অর্ডার দেয়। তবে লণ্ডন থেকে ক্রেতা সোজা বাড়িতে চলে আসায় অবাক সঞ্চিতা। হাসিমুখে বললেন, কার্পেটের অর্ডার দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে একটি সাইড ব্যাগ কিনেছেন। সেলাই মেশিন খারাপ থাকায় পুরো কাজ হাতেই করছি। সরকারি সাহায্য পেলে এবং একটি সেলাই মেশিন পেলে আরও ভালো কাজ করতে পারব।
  • Link to this news (বর্তমান)