• দুই বর্ধমানে রামনবমী পালনে শোভাযাত্রা, গেরুয়া হিন্দুত্ব ম্লান, রামে আধিপত্য তৃণমূলের
    বর্তমান | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান ও আসানসোল: বিজেপির হিন্দুত্বের আবেগে থাবা বসাল তৃণমূল কংগ্রেস। রামনবমীকে সামনে রেখে নতুন করে হিন্দুত্বের জিগির তোলার পরিকল্পনা ছিল গেরুয়া শিবিরের। কিন্তু পূর্ব বর্ধমান জেলায় রামনবমীর শোভাযাত্রাগুলি কার্যত ছিল শাসক দলের নেতাদের দখলে। পশ্চিম বর্ধমানেও রামনবমী ঘিরে কাটায় কাটায় টক্কর দিয়েছে দু’পক্ষ। শিল্পাঞ্চলে রামনবমীর সকালেই তরোয়াল হাতে দেখা যায় বিজেপির দুই ঩বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল ও লক্ষ্মণ ঘোড়ুইকে। জেলাজুড়ে নানা কর্মসূচিতে প্রথম সারিতে ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। পাল্টা পথে ছিলেন তৃণমূলের নেতামন্ত্রী থেকে তারকা সাংসদও। আসানসোলের চাঁদমারি, গোপালপুর সহ বিভিন্ন রামনবমীর পুজোয় অংশ নেন রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা চষে বেড়ান তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। সন্ধ্যায় রামনবমীর র‌্যালিতে হাজির হন তৃণমূল কংগ্রেসের আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহাও। রামনবমীর উৎসবে মানুষের উচ্ছ্বাস থাকলেও তাতে বিজেপিকে একচুলও জায়গা ছাড়েনি তূণমূল।

    বর্ধমানের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিপুকুরে বজরংবলীর মূর্তি নিয়ে র‌্যালি করেন যুব তৃণমূলে সভাপতি রাসবিহারী হালদার। বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস শহরের বিভিন্ন শোভাযাত্রায় প্রথম সারিতে ছিলেন। পূর্বস্থলী-১ ব্লকের রাজাপুরের ভাতসালায় সীতারামের পুজোয় অংশগ্রহণ করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা স্বপন দেবনাথ। বর্ধমান, আউশগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকায় শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এছাড়া আউশগ্রাম, কাটোয়া, কালনা সহ সব জায়গাতেই রামনবমীর শোভাযাত্রায় প্রথম সারিতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদেরই দেখা যায়। বর্ধমান শহরের কয়েকটি অনুষ্ঠানে বিজেপির নেতাদের দেখা যায়। তবে তাদের সেই আধিপত্য ছিল না। 

    প্রবীণ তৃণমূল নেতা স্বপন দেবনাথ বলেন, আমরা সীতা রামের কথা বলি। বহু বছর ধরে আমাদের এলাকায়  রমনবমী উদযাপন হয়ে আসছে। রাম কোনও রাজনৈতিক দলের দেবতা হতে পারে না। যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার বলেন, বিজেপি হিন্দুত্বের জিগির তুলে রাজনীতি করতে চায়। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। 

    বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, রামনবমী একটি ধর্মীয় উৎসব। এখানে রাজনীতির কোনও জায়গা নেই। কিন্তু তৃণমূল নেতারা সেটাই করতে চেয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীরা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিল।

    রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রামনবমীকে সামনে রেখে বিজেপি ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মহড়া ছেড়ে নিতে চেয়েছিল। প্রতিটি জেলায় শোভাযাত্রাগুলিতে তারাই আধিপত্য কায়েম করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু তাদের সেই পরিকল্পনা তৃণমূল ভেস্তে দেয়।  রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, তৃণমূল বিজেপির হিন্দুত্ব অস্ত্র ভোতা করে দিয়েছেন। শাসকদল হিন্দুত্ব আবেগে শান দিয়ে মাস্টার স্টোক দিয়েছে।  বিজেপির এক নেতা বলেন, নেতৃত্বের মধ্যে জনসংযোগের অভাব থাকার জন্যই আধিপত্য দেখাতে পারেনি। তৃণমূল নেতাদের জনসংযোগ অনেক বেশি। সেই কারণে জেলার প্রতিটি প্রান্তেই রামবমীর শোভাযাত্রায় তারা আধিপত্য  বিস্তার করতে পেরেছে।  আসানসোলে রামনবমীতে বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল।
  • Link to this news (বর্তমান)