আরামবাগে বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসকের ছেলের মৃত্যু
বর্তমান | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: আরামবাগে বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল চিকিৎসকের ছেলের। রবিবার সাত সকালে আরামবাগ শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেনেপুকুর এলাকার ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম দেবজ্যোতি নন্দী(২৯)। প্রতিবেশীরা বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে দমকল ও থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে আরামবাগ থানার পুলিস ও দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিস ও দমকলের কর্মীরা ঘরের দরজা ভেঙে দগ্ধ অবস্থায় যুবককে উদ্ধার করে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় দমকলের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রামপ্রসাদ দলুই বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে বাড়িতে গিয়েছিলাম। ঘরটির দরজা জানলা সব বন্ধ ছিল। খুব ধোঁয়া হচ্ছিল। জানলা, দরজা ভেঙে দেবজ্যোতিকে উদ্ধার করা হয়। খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক মৃণালকান্তি নন্দীর বাড়িতে এদিন সকালে ধোঁয়া দেখতে পান প্রতিবেশীরা। তবে চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। তাঁরা অন্যত্র ছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে তাঁরা বাড়িতে আসেন। তাঁদের ছেলে দেবজ্যোতি একাই ওই রাতে বাড়িতে ছিলেন। প্রতিবেশীদের অনুমান, দোতলার ঘরে দেবজ্যোতি ঘুমাচ্ছিলেন। সেই সময় ঘরে কোনওভাবে আগুন লাগে। ঘুমন্ত অবস্থাতেই তিনি দগ্ধ হন। সকালে ব্যাপক ধোঁয়া ও আগুন বের হতে দেখা যায়। আগুনের তীব্রতা থাকায় তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সেই সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে দমকল আসে। যদিও কীভাবে আগুন লেগেছে তার কারণ স্পষ্ট নয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মেশিন ছিল। সেখান থেকে শর্টসার্কিট হয়ে থাকতে পারে। অন্য কোনও কারণে আগুন লেগেছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। ঘটনার জেরে শোকে ভেঙে পড়েন মৃতের বাবা ও মা। তাঁরা এদিন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। মৃতের জেঠিমা শ্যামলী নন্দী বলেন, আমার দেওর সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। অবসর নিয়ে এখন বাইরে চেম্বার করেন। আমাদের পাশেই বাড়ি। এদিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘরের ভিতর থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখি। কিন্তু, কখন আগুন লেগেছে, তা জানি না। দেবজ্যোতি আগে চাকরি করত। তা ছেড়ে দিয়ে এখন বাড়িতেই ছিল।
মৃতের এক বন্ধু রোহিত বলেন, দেবজ্যোতির সঙ্গে আমাদের কয়েক বছরের সম্পর্ক। মাঝে ও চাকরি করতে যায়। ওর মন খুবই ভালো ছিল। ওর এমন পরিণতি হবে ভাবতে পারিনি। খুবই খারাপ লাগছে।
প্রতিবেশী সোমনাথ দেব বলেন, খুব সকালে ওই বাড়ি থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখা যায়। ঘটনা জানাজানি হতেই দমকল ও পুলিস আসে। তারাই ওই যুবককে উদ্ধার করে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুন লাগার জেরে বাড়ির মধ্যে থাকা ফ্রিজ সহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।