পঞ্চায়েতের আওতাভুক্ত হওয়ায় মিলছে না ভেন্ডিং লাইসেন্স, ব্যবস্থা নিতে হবে প্রধানকে
বর্তমান | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আদতে শহরাঞ্চল হলেও এনকেডিএ’র (নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি) অন্তর্গত নিউটাউন, রাজারহাটের বেশ কিছু জায়গা পঞ্চায়েতের আওতাভুক্ত। ফলে এসব জায়গায় মিলছে না ভেন্ডিং লাইসেন্স। অর্থাৎ কেউ চাইলেও বৈধভাবে ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছেন না। উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী। তাঁদের অভিযোগ, ব্যবসার জন্য বৈধ ভেন্ডিং লাইসেন্স না থাকলে যে কোনও দিন তাঁদের উচ্ছেদ করা হতে পারে।
রাজারহাটের ঝালিগাছির বাসিন্দা তথা মামলাকারী প্রণব সর্দার সহ আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীর দাবি, তাঁরা প্রায় ২০ বছর ধরে ঝালিগাছি মোড়ে ব্যবসা করছেন। বেশ কয়েকবার আবেদন জানানোর পর ২০১৯ সালে তাঁদের ট্রেড লাইসেন্স দেয় চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। কিন্তু রাস্তার ধারে বৈধভাবে ব্যবসা চালানোর জন্য ভেন্ডিং লাইসেন্স প্রয়োজন। শহর এলাকায় সাধারণত টাউন ভেন্ডিং কমিটি এই ভেন্ডিং লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স মেলার পর প্রথমে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছেই ভেন্ডিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন ব্যবসায়ীরা। তখন তাঁরা জানতে পারেন, পঞ্চায়েতের তরফে এই লাইসেন্স দেওয়ার মতো সংস্থানই নেই। জায়গাটি যেহেতু এনকেডিএ’র আওতাভুক্ত, তাই পরবর্তীতে মামলাকারীরা এনকেডিএ’র টাউন ভেন্ডিং কমিটির কাছে ওই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এনকেডিএ কর্তৃপক্ষও লাইসেন্স দিতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলাটির শুনানি হয়। যাবতীয় অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজারহাটের বিডিও’র কাছে রিপোর্ট তলব করেন বিচারপতি সিনহা। পরবর্তীতে বিডিও রিপোর্ট দিয়ে জানান, সাধারণত টাউন ভেন্ডিং কমিটি ভেন্ডিং লাইসেন্স দিয়ে থাকে। ঝালিগাছি মোড় শহর এলাকা হলেও সেটি চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন। কিন্তু চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বা ওই গ্রাম পঞ্চায়েত যে পঞ্চায়েত সমিতির অর্ন্তগত, সেখানেও কোনও টাউন ভেন্ডিং কমিটি নেই। তাই মামলাকারীদের ভেন্ডিং সার্টিফিকেট বা লাইসেন্স দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এই রিপোর্ট দেখার পর বিচারপতি সিনহা নির্দেশে জানিয়েছেন, এলাকাটি যে কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত, তাকেই এক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, লোকাল বডি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উপরই এই ধরনের আবেদন নিষ্পত্তির দায়িত্ব বর্তায়। তাই মামলাকারীদের চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকেই ভেন্ডিং লাইসেন্স দিতে হবে। এরপরই মামলাকারীদের আবেদন বিবেচনা করে আট সপ্তাহের মধ্যে লাইসেন্স দেওয়ার জন্য পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহা।