২০১০ এবং ২০১৩ সালে পর্যায়ক্রমে ১০,৩২৩ জন শিক্ষককে নিয়োগ করেছিল ত্রিপুরার তৎকালীন বাম সরকার। তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সেটা হবে না। চাকরিতে ‘যোগ্যদের’ পুনর্বহাল করা হবে। চাকরিহারাদের আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি নেতাজি ইন্ডোর থেকে এ রাজ্যে বাম জমানার উদাহরণ টেনে চড়া সুরে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতার কথায়, ‘বদহজম হওয়া সত্ত্বেও ৩৪ বছর যারা অন্যায় করেছে, সেই সিপিএমের কারও চাকরি খাইনি।’ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকেও একহাত নিয়েছেন তিনি।
মমতার মুখে উঠে আসে ব্যপম কেলেঙ্কারি, নিট কেলেঙ্কারির কথাও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপির রাজ্যে মধ্যপ্রদেশে ব্যপম কেলেঙ্কারি ঘটেছে। ৮৯ জন মানুষকে খুন করা হয়েছিল। আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি। নিট নিয়ে এত কেস হয়েছে, বাতিল করা হয়নি। শুধু বাংলাকে টার্গেট করা হচ্ছে কেন?’
বাম আমলে ‘চিরকুট’ দিয়ে চাকরি হতো, ফের সেই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, পূর্বতন সরকারের আমলের কাউকেই চাকরিচ্যুত করা হয়নি। তাঁর সংযোজন, ‘বিকাশ ভট্টাচার্য (চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী) কেন সব লিস্ট বাতিল করল, সিপিএমের কাছে আজকে আমি সেই প্রশ্নটা করছি, ওদের আগে সেই উত্তর দিতে হবে। একটা-দুটো কাজ করতে গেলে ভুল হতে পারে। ভুল সংশোধন করার জন্য প্রশাসনকে সময় দাও। প্রশাসনকে যদি সময় দিত তা হলে প্রশাসন সময় নিয়ে সেই কাজটা করতে পারত।’
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর থেকেই রাজ্যের বিরোধী দলগুলি সরকারকে এই পরিণতির জন্য দায়ী করেছে। পাল্টা বিরোধীদের আক্রমণ করে চাকরিহারাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আপনাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে, কোনটা মুখ আর কোনটা মুখোশ। আপনাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। এদের চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই, চাকরি কাড়ার ক্ষমতা আছে। যাত্রাপালার মাধ্যমে আপনাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে।’
গোটা বক্তব্যে বারবার চাকরিহারা ‘যোগ্য’ প্রার্থীদের আশ্বাস দিতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, ‘লাল, নীল, গেরুয়া কোনও রঙ দেখব না। তাতে আমায় জেলে ভরুক। কিন্তু যোগ্যদের যাতে চাকরি না যায়, সেটা আমরা সবসময়ে চাই।’
পাল্টা এ দিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিন বছর সময় পাওয়া গিয়েছিল যোগ্য-অযোগ্যদের আলাদা করার জন্য। সরকার সেই তালিকা আদালতে দেখাতে পারেনি। তালিকা না দিলে ১৯ হাজার চাকরিহারার সঙ্গে পাপ করা হচ্ছে।’