• রামনবমীর শোভাযাত্রায় মিষ্টি বিতরণ রহমান-ইসরায়েলদের
    এই সময় | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
  • সুমন ঘোষ, খড়্গপুর

    সকাল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে রামনবমীর শোভাযাত্রা বেরিয়েছে। পুলিশ প্রশাসন আগে থেকেই নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে রেখেছিল গোটা জেলা। কিন্তু তার মধ্যেই এক অন্য চিত্র দেখা গেল। রবিবার সন্ধেয় বেলদায় রামনবমীর শোভাযাত্রা আসতেই ফুলবৃষ্টি-মিষ্টি বিলি করলেন ওহিদ রহমান, শেখ ইসরায়েলরা।

    এ দিন নারায়ণগড় ব্লকের তৃণমূল বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্রর উদ্যোগে রামনবমীর শোভাযাত্রা বেরোয়। সেটি বেলদা বাজারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ে ফুল বৃষ্টি করে অভ্যর্থনা জানালেন ওহিদরা। শোভাযাত্রা থেকেই ওহিদকে জড়িয়ে ধরেন অতনু-মিলনরা।

    ওহিদুলের বাড়ি বেলদা লাগোয়া কসবা আসনদা গ্রামে। বেলদা বাজারে তাঁর চা ও লস্যির দোকান। মা, স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে থাকেন তিনি। বেলদা বাজারে যখন রামনবমীর শোভাযাত্রা ঢুকছে তখনই ফুলের দোকানে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। ফুল নিয়ে এসে শোভাযাত্রায় ছুড়তে শুরু করেন তিনি। ওহিদ বলেন, 'আমার অনেক হিন্দু বন্ধু রয়েছে। ইদ, মহরমে তাঁরা আমার সঙ্গে আনন্দ করেন। তা হলে আমি কেন রামনবমীর শোভাযাত্রাতে আনন্দ করব না।'

    এ নিয়ে যদি কোনও কথা ওঠে? ওহিদের সাফ জবাব, 'কে কী ভাবলেন, বললেন, আমি তা নিয়ে কিছু ভাবি না। আমার মন যা চেয়েছে তাই করেছি। আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হতে দেবো না।' তিনি আরও বলেন, 'শোভাযাত্রায় থাকা প্রতিটি মানুষ আমাকে দেখে হাত নেড়েছেন, কেউ বুকে জড়িয়ে ধরেছেন, এর থেকে আনন্দ আর কিসে আছে?' শোভাযাত্রা শেষে আবার ওহিদ চলে যান দোকান সামলাতে।

    শুধু ওহিদ নন, রামনবমীর শোভাযাত্রায় সকলকে শরবত ও লাড্ডু খাওয়াতে বেলদা বাসস্ট্যান্ডে হাজির হয়েছিলেন শেখ ইসরায়েল, মির মফিজুল, আয়ু খাঁ-এর মতো জনা কুড়ি যুবক। সবাই ব্যস্ত শরবত তৈরি করতে। সঙ্গে রয়েছে মিষ্টির প্যাকেট। তাঁরা বলছেন, 'রামনবমীর শোভাযাত্রা এলেই সকলকে শরবত খাওয়াতে হবে। সঙ্গে লাড্ডুও। এতে আমরাই আনন্দ পাই। মানুষকে খাইয়ে তৃপ্তি পাই।'

    তা ছাড়া শেখ ইসরায়েল বলেন, 'এখন একসঙ্গে থাকাটা খুব জরুরি। জাতপাতের কথা তুলে রাজনীতি চলছে। তাতে মরছে সাধারণ মানুষ। ধর্ম নিজের কাছে রেখে উৎসবে মেতে উঠতে চাই সবাই। তাই এমন উদ্যোগ।' বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট বলেন, 'এটাই তো আমাদের সংস্কৃতি। বাংলার মানুষ বিজেপির চক্রান্তকে সফল করতে দেবে না।'

  • Link to this news (এই সময়)