জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আগামী দুমাসের মধ্য়ে রাজ্যের চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি নিশ্চিত করে দেওয়া হবে। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এও জানিয়েছেন তিনি বেঁচে থাকতে যোগ্যদের চাকরি যাবে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সুপ্রিম কোর্ট বা সিবিআই-কেউই বলতে পারেনি যোগ্য় কারা আর অযোগ্যই কারা। এনিয়ে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় বের হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ৭ এপ্রিল আমি ২৬ হাজার চাকরিহারার সঙ্গেই বসব। কিন্তু ওঁর তল্পিবাহক ও পুলিস মাত্র ৭ হাজারকে ঢুকতে দিয়েছে। বাকীরা বাইরেই থেকে গিয়েছে। যারা বঞ্চিত তাদের কাউকে আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনও বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। কারণ এই মুখ্য়মন্ত্রী প্রথমত পার্থ চ্যাটার্জিকে দিয়ে এসএসসির অটোনমি খতম করেছেন। অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় পাঁচ হাজারকে অযোগ্য ঘোষণা করেছিলেন। সেই ঘোষণা মানা হলে বাকীদের দুর্ভোগ হত না।
বিরোধী দলনেতা বলেন, এই ২৬ হাজারের চাকরি যাওয়ার জন্য যদি কেউ দায়ী থাকেন তাহেল তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমান চিফ জাস্টিস ও প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির আমলে মোট ১৬ বার এই মামলায় শুনানি হয়েছে। সবাইকে বলার সুযোগ দিয়েছেন। কোটি কোটি খরচ করে আইনজীবী দিয়ে মুখ্য়মন্ত্রী অযোগ্যদের বাঁচানোর জন্য যোগ্যদের বলি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ওই ১৬ বারের মধ্যে একবারও যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা পেশ করেননি সরকার।
এসএসসির এই সমস্যা নিয়ে শুভেন্দু মনে করিয়ে দেন ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর বিজেপি এসএসসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে চাই। তিনি দেখা করেননি। তাঁর সচিব দেখা করেন। সেখানে আমরা বলি ৭ জানুয়ারি ২০২৫ মামলার ডেট রয়েছে। সেখানে যদি আপনারা যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা দিতে না পারেন তাহলে সকলের চাকরি চলে যাবে। এমনটাই মামলার গতিপ্রকৃতি। আপনারা দয়া করে বাছাই করুন।
যোগ্য কারা, অযোগ্য কারা? শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এরা ওয়েমার শিট নষ্ট করেছে। গাজিয়াবাদ থেকে সিবিআই হার্ড ডিস্ক থেকে ওএমআর উদ্ধার করে প্রকাশ করার ফলেই যোগ্যরা বলতে পারেছেন, আমরা যোগ্য। সিবিআইয়ের জন্য। নইলে আজ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বিপর্যয়ও আসতে পারত।
মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে শুভেন্দু বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বলব আপনি সরাসরি প্রধান বিচারপতিকে আক্রমণ করেছেন। আপনি বলেছেন যোগ্যদের রক্ষা করব। যোগ্যদের রক্ষা করার জন্য হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট আপনাকে ৩ বছর সময় দিয়েছিল। আপনি কিছুই করেননি। আপনি বলেছেন চাকরি দেব। আপনি কীভাবে ২০১৬ সালের ২৩ লাখ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেবেন। অযোগ্যদের সংখ্যা ৭-৮ হাজার হবে বলে বলছে সবাই। ওইসব প্রার্থীদের বাদ দিয়ে ২০১৬ সালের ২৩ লাখ আবেদনকারীকেই পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। সরকার রিভিউ পিটিশন ফাইল করেছে আজকে। এটাকে আমি ওয়েলকাম করছি। কিন্তু আমি বলছি, যেদিন হেয়ারিং হবে সেদিন যোগ্য়দের তালিকা ফেলে দিন। তাহলেই দুধ আর জল আলাদা হয়ে যাবে। তাহলেই যোগ্য়দের আর সমস্যা থাকবে না।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, তিনি নিজেও আইনজীবী। কয়েকটি কেস লড়েছেন। এনিয়ে শুভেন্দু বলেন, আপনি নিজে বলেছেন আপনি আইনজীবী। আমি অনুরোধ করব সুপ্রিম কোর্টে যোগ্যদের পক্ষে আপনি আবেদন করুন। আপনি ক্যালকাটা বারের মেম্বার। আপনি আজ বলেছেন আমি অনেক কেস লড়েছি। তাই আমার অনুরোধ আইনজীবী হিসেবে যোগ্যদের তালিকাটা হাতে নিয়ে গিয়ে বলুন আমি আইনজীবী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছি। এই হল যোগ্যদের তালিকা। এদের কথা বিবেচনা করুন। তা যদি না করতে পারেন তা হলে ২৩ লক্ষ ভাইবোনকে ফের পরীক্ষায় বসতে হবে। ৯ বছর আগে যে প্রস্তুতি তাদের ছিল সেই প্রস্তুতি তাদের থাকতে পারেন না। এখন পরীক্ষা নিয়ে ১৯ হাজার চাকরি প্রার্থীর সঙ্গে পাপ করা হবে।