• ‘এই সব পেশা যদি বিক্রি হয়…’, চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে কী বললেন তারাসুন্দরী স্কুলের ‘বড়দি’?
    এই সময় | ০৭ এপ্রিল ২০২৫
  • সর্বস্বান্ত অবস্থা চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। নিজেদের অধিকারের জন্য লড়ে যাচ্ছেন তাঁরা। আদালত, সরকার, নিয়োগ কমিশন, রাজনৈতিক দল – সকলের কাছেই তাঁদের আবেদন, অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক, সামাজিক অবক্ষয় থেকে রক্ষা করা হোক এ রাজ্যকে। মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছেন অনেকে। সেই সকল ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দিলেন হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষিকা মোনালিসা মাইতি।

    সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে এক লহমায় বদলে গিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্রটা। সরকারের আশ্বাস, ‘কোনও যোগ্য প্রার্থী চাকরিহারা হবেন না’। তবে, আশ্বস্ত নন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। টানেলের শেষ প্রান্তে আলোর ঝলক কি দেখা যাবে? সন্দিহান চাকরিহারা সকলেই। হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের বড়দি বললেন, ‘যাঁরা এই সময়ের ভিতর দিয়ে চলেছেন, তাঁরা যথেষ্ট শিক্ষিত মানুষ। তাঁদের পরিণত মানসিকতা রয়েছে। অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা অনেক বড় বড় স্কুল সামলেছেন। তাঁরা মানসিকভাবে কমজোরি বলে আমি মনে করি না। তবে এটা ঠিকই যে, এই ধাক্কা সামলাতে অনেকটা সময় লাগবে।’

    অধিকারের জন্য লড়াই, সম্মানের জন্য লড়াই, অস্তিত্বের জন্য তাঁদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে বলেই জানালেন মোনালিসা মাইতি। তাঁর কথায়, ‘আমি মনে করি, হেরে চলে যাওয়ার মধ্যে কিন্তু মানুষ হিসেবে ভালো জায়গা তৈরি হয় না। আশা রাখব, সবাই নিজেদের জায়গায় লড়ে যাবেন। আগামী দিনে ভালো কিছু দেখতে পাবেন।’

    পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে ‘খামতি’ রয়েছে সেটা মেনে নিয়েছেন তিনি। তবে তিনি আশাবাদী, শেষে ভালো হবেই। মোনালিসা বলেন, ‘কোথাও না কোথাও একটা খামতি হয়েছে। যার তরফেই হোক না কেন! এটা সকলেই বুঝতে পারছেন। তবে এটা কাঙ্খিত, যাঁরা যোগ্য তাঁরা তাঁদের সম্মান ফিরে পান এবং যাঁরা অযোগ্য তাঁদেরও চিহ্নিতকরণ করা প্রয়োজন।…ডাক্তার, শিক্ষক এই সব পেশা যদি বিক্রি হয়ে যায়, তা হলে সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে পড়বে।’

    একসঙ্গে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীর চাকরি যাওয়ায় রাজ্যের স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন কী ভাবে হবে? তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। এই কঠিন সময়ে স্কুলের বাকি শিক্ষকদের কিছুটা বাড়তি দায়িত্ব নেওয়া উচিত বলে অভিমত তাঁর। বড়দি বলেন, ‘পড়ুয়ারা অসুবিধায় পড়বেন অবশ্যই। সে ক্ষেত্রে আমাদের বাকি শিক্ষকদের বিকল্প ভাবনা ভাবতে হবে। অবশ্যই ভাবতে হবে।’

    উল্লেখ্য, ২০১৬ বাতিল প্যানেলে নাম রয়েছে হাওড়ার তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবনের দুই শিক্ষিকার। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে তাঁর মত, ‘আমার স্কুল থেকেও দু’জন কর্মদক্ষ শিক্ষিকাকে হারিয়েছি। আমিও ব্যথিত। তাঁদের পড়ানো বা তাঁদের পড়াশোনা নিয়ে আমার কোনও অভিযোগ এখন নেই। ভবিষ্যতেও কোনওদিন থাকবে না। আমি চাই তাঁরা তাঁদের জায়গাতে যাতে সসম্মানে ফিরতে পারে।’

  • Link to this news (এই সময়)