অ্যাম্বুলেন্স চালকের দাদাগিরি, তাতেই হয়রান প্রসূতির জীবন সংকটে...
আজকাল | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকের কথা মেনে রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে রাজি না হওয়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে রেফার করে দেওয়ার পর এক রোগীকে অর্ধেক রাস্তা থেকে ঘুরিয়ে এনে ফের একবার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই ফেলে রেখে দিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রানিতলা থানার অন্তর্গত নশিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
রোগীর পরিবারের তরফে রবিবার রানিতলা থানায় অভিযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সোমবার গোটা বিষয়টি নিয়ে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেন। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সৈয়দ আসিফ ইকবাল জানিয়েছেন, 'মহিলার পরিবারের তরফ থেকে গোটা বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। যদি অ্যাম্বুলেন্স চালক প্রকৃতই এই কাণ্ড করে থাকেন তাহলে তিনি অন্যায় করেছেন। গোটা বিষয়টি তদন্ত হবে এবং তারপর যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' অন্যদিকে রানিতলা থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রবিবার ওই মহিলার পরিবারের তরফ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। গত শুক্রবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে রানিতলা থানার নন্দনপুর এলাকার বাসিন্দা মেহেনুরা খাতুন নামে এক মহিলাকে নশিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরিষেবা দেওয়ার পর ওই মহিলাকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে রেফার করে দেন।
কুলসন বিবি নামে ওই রোগীর পরিবারের এক সদস্যা বলেন, 'রানিতলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা মেহেনুরাকে লালবাগ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়ার পরই গোপাল মন্ডল নামে এক অ্যাম্বুলেন্স চালক আমাদের ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপস্থিত হন। অ্যাম্বুলেন্সে চাপার আগেই ওই চালক বলতে থাকেন ১৪ হাজার টাকা দিলে আমাদের রোগীকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেবেন। কিন্তু আমরা তাকে জানিয়ে দিই অত টাকা দেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা আমাদের নেই। আমরা রোগীকে সরকারি হাসপাতালেই নিয়ে যেতে বলি।' অভিযোগ, 'কিছুদূর যাওয়ার পর অ্যাম্বুলেন্স চালক আমাদের কাছে গাড়ি ভাড়া বাবদ ৯২০ টাকা এবং অক্সিজেনের জন্য ৪০০ টাকা দাবি শুরু করেন। যদিও আমাদের রোগীকে গাড়িতে কোনও অক্সিজেনই দেওয়া হয়নি। আমরা বলি সরকারি গাড়ির জন্য আমরা কোনওরকম টাকা দেব না।‘ তর্ক-বিতর্কের মাঝে প্রসূতিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই নিয়ে গিয়ে নামায় অ্যাম্বুলেন্স। পরে অন্যদের সাহায্যে হাসপাতালে পৌঁছন রোগী।