চাঞ্চল্যকর ঘটনা শহরের হোমে। বাথরুম থেকে উদ্ধার যুবকের ঝুলন্ত মৃতদেহ। নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার ফরতাবাদের একটি হোমের ঘটনা। মৃত যুবকের নাম সন্দীপ সিং। বয়স ২১ বছর। যুবকের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একইসঙ্গে এই ঘটনায় নতুন করে হোমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

পরিবার সূত্রে খবর, মৃত যুবক সন্দীপ সিং-এর বিরুদ্ধে চেতলা থানায় পকসো আইনে একটি মামলা চলছিল। পাশাপাশি অতিরিক্ত গাঁজা সেবনের অভিযোগ থাকায় আসক্তি কাটাতে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর থেকে তাঁকে ফরতাবাদ এলাকায় ‘আরোগ্য নিকেতন’ নামের এই হোমে রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি তাঁর পরিস্থিতির উন্নতি নজরে আসায় সন্দীপের বাবা মা তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন। পরিবারের দাবি, সেই মতো ওই হোমের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন যে ৫ এপ্রিল ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাবেন। কিন্তু ,৬ এপ্রিল পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি বলে অভিযোগ। এর পরই সোমবার ভোররাতে বাথরুমের মধ্যে গলায় গামছা দিয়ে আত্মঘাতী হয় সন্দীপ। তাঁকে উদ্ধার করে এম.আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। কী কারণে এমন ঘটনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্ত শুরু করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে হোমের ভূমিকা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নরেন্দ্রপুরের রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফরতাবাদ এলাকায় ‘আরোগ্য নিকেতন’ নামে এই হোম বিগত তিন মাস ধরে এই বাড়িতে চালু রয়েছে। যদিও হোমের বয়স প্রায় ৯ বছর, তবে নতুন ঠিকানায় হোমের কাজ শুরু হয়েছে সম্প্রতি।

এই হোম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতা গোপাল দাস। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ওয়ার্ডের মধ্যে এই ধরনের হোম চালানোর বিষয়টি তিনি জানতেনই না। পুরসভা বা স্থানীয় কাউন্সিলারদের কোনও রকম অনুমতি ছাড়াই এই হোম পরিচালনা করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি এই মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, হোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। ঘটনাকে ঘিরে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। হোমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নজরদারি এবং পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা প্রশ্ন।