শক্তি প্রদর্শনে বংশীবদন, দাবি আদায়ে রাজবংশীদের এককাট্টা হওয়ার ডাক
বর্তমান | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে শক্তি প্রদর্শনে নামলেন গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মন। সোমবার জলপাইগুড়িতে প্রকাশ্য সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে রাজবংশীদের এককাট্টা হওয়ার ডাক দেন তিনি। ভোটের দিন যত এগিয়ে আসবে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রাজবংশীদের মধ্যে ভাঙন ধরানোর পাশাপাশি তাঁদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে বলেও এদিন সতর্ক করে দেন ওই গ্রেটার নেতা। একইসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের উদ্দেশে রীতিমতো ‘শর্ত’ বেঁধে দেন দ্য গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক। মঞ্চ থেকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, আমরা যার নুন খাব, তারই গুন গাইব। অর্থাৎ, যে দল আমাদের কথা ভাববে, আমরা তার সঙ্গে আছি।
হুঁশিয়ারির সুরে বংশীবদন এদিন বলেন, আগামী বিধানসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে দু’হাজার রাজবংশী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৫০টি রাজবংশী জুনিয়র হাইস্কুলের অনুমোদন দিতে হবে রাজ্যকে। যদি রাজ্য আমাদের এই দাবি মেনে নেয়, তাহলে তৃণমূলের জয় কেউ আটকাতে পারবে না। কারণ, আমরা অর্থাৎ রাজবংশীরা উত্তরবঙ্গের ভোটে অন্যতম নির্ণায়ক শক্তি। রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রকে উদ্দেশ্য করেও এদিন শর্ত চাপিয়েছেন ওই গ্রেটার নেতা। বলেন, ভারতভুক্তির চুক্তি অনুযায়ী গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবি রয়েছে আমাদের। কেন্দ্র ওই দাবি পূরণ করলে আমরা বিজেপিকে ঢেলে ভোট দেব। দাবি আদায়ে সমস্ত রাজবংশীকে একছাতার তলায় আসারও আহ্বান জানান বংশীবদন। বলেন, রাজবংশী ও কামতাপুরি বলে আলাদা কিছু হয় না। দু’টোই এক। তাঁদের দাবির সঙ্গে একমত হলে কেএলও’র জীবন সিংহকেও কাছে টেনে নিতে আপত্তি নেই বলে এদিন জানিয়েছেন ওই গ্রেটার নেতা। বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় সমাবেশ হবে বলেও এদিন জানিয়েছেন বংশীবদন।
জলপাইগুড়ি শহরের মিলন সঙ্ঘের মাঠে এদিনের সমাবেশে দ্য গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বংশীবদন বর্মন বলেন, গত বিধানসভা ভোটের আগে আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রাজবংশী প্রাথমিক স্কুলের দাবি জানিয়েছিলাম। এখনও পর্যন্ত দু’শোটি রাজবংশী প্রাথমিক স্কুলের সরকারি অনুমোদন মিলেছে। সেকারণে আমরা তৃণমূলকে সমর্থন করেছি। আরও রাজবংশী স্কুল হবে বলে রাজ্যের তরফে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। উঁচু ক্লাসে রাজবংশী ভাষায় পঠনপাঠনের জন্য আমরা সিলেবাস তৈরি করছি।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থে রাজবংশীদের ‘ব্যবহার’ করে বলেও এদিন তোপ দাগেন বংশীবদন। বলেন, আমাদের ভোটে জিতে নেতা ও নেতার আত্মীয়দের গাড়ি-বাড়ি, টাকা হয়ে যায়। কিন্তু রাজবংশীরা সেই তিমিরে থেকে যান। উত্তরবঙ্গের ‘বঞ্চনা’ প্রসঙ্গে এদিন বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়েননি ওই গ্রেটার নেতা। বলেন, এখন তো যেমনতেমন আছি, কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় এলে আমাদের হাতে ‘ভিক্ষুকের কার্ড’ ধরিয়ে দেবে। উত্তরবঙ্গ থেকে এইমস চলে গেলেও এখানকার বিজেপি নেতারা মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন। জলপাইগুড়িতে জিসিপিএ’র সভা। - নিজস্ব চিত্র।