• প্রেমিকের নেশার অভ্যাস ছাড়াতে না পেরে আত্মহনন নাবালিকার!
    বর্তমান | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: হাজার কষ্ট-ত্যাগস্বীকার করে প্রেমিককে সত্পথে আনতেই হবে। নায়িকাদের এমন ধনুকভাঙা পণ নিয়ে লড়াইয়ের কাহিনি হামেশাই উঠে এসেছে হালফিলের সিনেমায়। এসব বরাবরই প্রভাব ফেলে কিশোরমনে। তেমনই কি ঘটেছে ফুলবাড়ি নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনায়!

    প্রেমিকের নেশা ছাড়াতে না পেরে অবসাদে প্রেমিকের সামনে আত্মহননের পথ বেছে নিতে হয়েছে কি না, পুলিস ও চিকিৎসকদের একটি সূত্রে এমনই সম্ভাবনার কথা সামনে আসছে। যদিও পুলিস বারবার মূল অভিযুক্ত রোহিত রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে আসল সত্য খুঁজে বার করার চেষ্টা করছে। তবে একাধিকবার জেরার মুখে পড়লেও মূল অভিযুক্ত নিজের দোষ স্বীকার করেনি। তার দাবি, নেশা কেটে যাওয়ার পর প্রেমিকাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেছিল সে। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, ঝুলন্ত অবস্থায় দেখার পরও প্রতিবেশীদের না ডেকে কেন সহযোগীকে ডেকে চুপি চুপি গাড়িতে তুলে নিয়ে গেল সে? কেন নাবালিকার পরিবারকে অন্য গল্প দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল রোহিত? প্রথমেই প্রতিবেশীদের ডেকে নাবালিকাকে বাঁচানোর চেষ্টা কেন করা হয়নি? এই সকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পাশাপাশি মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে পুলিস। সেই রিপোর্টটি আসল সত্যতা তুলে ধরবে বলে আশাবাদী তারা। পুলিসের দাবি, সবদিক খতিয়ে তদন্ত চলছে। 

    গলায় ফাঁসের কারণে শহর সংলগ্ন ফুলবাড়ি শান্তিপাড়ার নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করেছিল তদন্তকারীদের একাংশ। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সেই দিকে ইশারা করছে। এ প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি(পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। তবে কীভাবে নাবালিকার মৃত্যু হয়েছিল তা চিকিৎসকদের রিপোর্ট হাতে পেলেই স্পষ্ট হবে। অভিযুক্ত বারবার নিজেকে নিরপরাধ বলে প্রমাণ করতে চাইলেও পুলিস সবদিক খতিয়ে দেখছে।

    গত মঙ্গলবার বিকেলে শান্তিপাড়ার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে মৃত অবস্থায় তার বাড়িতে নিয়ে যায় রোহিত রায় এবং তার এক নাবালক সহযোগী। এরপর তাদের নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা নাবালিকাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে নাবালিকার পরিবার। তারা হাসপাতালে ওই দুই অভিযুক্তকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেন। যদিও পরবর্তীতে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোহিত রায়কে সাতদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিস। অভিযুক্ত নাবালককে পাঠানো হয়েছে হোমে। প্রাথমিক জেরায় পুলিস জানতে পেরেছে ওই নাবালিকার পরিবারকে ফোন করে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য রোহিত তার নাবালক সহযোগীকে বলেছিল। সেইমতো নাবালিকা উত্তরকন্যার পাশের একটি ঝোঁপঝাড়ে পড়ে রয়েছে বলে ভুল তথ্য দিয়ে পরিবারের লোককে ফোন করেছিল অভিযুক্ত নাবালক। তবে পুলিসের জেরার মুখে পড়লেও নাবালিকাকে সে খুন করে নিয়ে করেনি বলে বারবার দাবি করছে রোহিত। তবে সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল বলে স্বীকার করেছে। যদিও পুলিস অভিযুক্তের যুক্তি মানতে চাইছে না। সেই কারণে তদন্তে কোনও ধরনের ফাঁক যাতে না থেকে যায়, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বারবার চিকিৎসক দল, ফরেনসিক দল পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা যাচাই করছে পুলিসের তদন্তকারীরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)