নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি শহরে বাড়ছে পুলকারের দাপট। অনেক ক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষ অনুমোদন না দিলেও অভিভাবকদের একাংশের সঙ্গে কথা বলে চালকরা নিজেরাই পড়ুয়াদের তুলে নিচ্ছেন গাড়িতে। স্কুল বাস থেকে কম খরচ হওয়ায় অভিভাবকদের একাংশ ওই গাড়িগুলিতে পড়ুয়াদের দিয়ে দিচ্ছেন। আর এতেই বিপদ বাড়ছে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, শহরজুড়ে যে পুলকার চলছে তার অধিকাংশ গাড়িরই সমস্ত নথি ঠিক থাকে না। এমনকী, গাড়িগুলির রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও একাধিক নিয়ম মানা হয় না। গাড়িগুলির বেশিরভাগই অনেক পুরনো থাকায় তাদের রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজও থাকে না বলে অভিযোগ। কাজেই যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
সম্প্রতি শিলিগুড়ির চম্পাসারিতে একটি পুলকারে আগুন লেগে গিয়েছিল। পড়ুয়াদের কিছু না হলেও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। তার আগে গাজোলডোবায় ক্যানেলের ধারে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল একটি পুলকার।
পুলকার নিয়ে পরিবহণ দপ্তরও চিন্তিত। বারবার অভিযান চালিয়েও দাপট রোখা যায়নি বলে তাদের দাবি। পুলকারের বিকল্প হিসেবে সব রুটে বাসের ব্যবস্থা করা গেলে এই সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে দাবি করেছেন শিলিগুড়ির অতিরিক্ত আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, আমরা বেশ কয়েকবার বিভিন্ন স্কুলের বাইরে পুলকারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের একাংশ এবিষয়ে সচেতন না হলে সম্পূর্ণভাবে পুলকার বন্ধ করা কঠিন হবে।
পুলকার প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি পুরসভার ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, এই বিষয়ে আমরা অভিভাবকদের বারবার সতর্ক করছি। তবে এই ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষেরও বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন।
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, শিলিগুড়িতে পুলকারের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে। শহরে প্রচুর স্কুল হয়েছে। নার্সারি থেকে শুরু করে হাইস্কুল পর্যন্ত স্কুলগুলিতে প্রচুর ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে। শহর অন্তত ২৫০০ পুলকার রয়েছে। যার বেশিরভাগই কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করে মর্জি মাফিক চলছে। ফলে অভিভাবকদের একাংশ চিন্তিত।
শিলিগুড়ির শক্তিগড়ের বাসিন্দা তীর্থ রায় বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুরনো গাড়ি পুলকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে যেকোনও সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। তাই সন্তানের নিরাপত্তার জন্য পুলকার থেকে দূরে থাকাই ভালো। ভারতনগরের বাসিন্দা বিপ্লবী তালুকদার বলেন, আমার কাছেও বহুবার পুলকার চালকরা নানা ধরনের লোভনীয় সুযোগ নিয়ে এসেছিলেন। তবে আমি আমার ছেলেমেয়েদের স্কুল বাসে দিয়েছি।