পড়াশোনা বন্ধ রেখে মুরারইয়ের মাদ্রাসা চত্বরে বসল মেলা, বিতর্ক
বর্তমান | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দিয়ে মেলা হচ্ছে মুরারইয়ের ডুমুরগ্রাম হাই মাদ্রাসার (উচ্চ মাধ্যমিক) ক্যাম্পাসে। বাদ যায়নি ক্লাস রুমও। সেখানেও খাবারের স্টল করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে মেলা চলবে চারদিন। প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলেন, বহুদিন ধরেই এই সময়ে স্কুলের মধ্যেই এই মেলা হয়ে আসছে। মাদ্রাসার জন্য জমি দান করেছেন ওঁরাই। তাই জোর করেন। বাধা দিয়েও পারিনি।
স্কুলের বাইরে রয়েছে পীরবাবার মাজার। প্রতিবছর এই সময়ে উরুস উপলক্ষ্যে স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যেই মেলা হয়ে আসছে। এবারও তার অন্যথা হয়নি। মেলার জন্য মাদ্রাসা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্কুল চত্বরে নানারকম দোকান করা হয়েছে। বসেছে নাগরদোলা। ক্লাস রুমের ভিতরে এগরোল, মোগলাইয়ের স্টল হয়েছে। পঠনপাঠন ছাড়া স্কুল এভাবে ব্যবহার করা যায় কি না সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
যদিও উরুস কমিটির সম্পাদক মহম্মদ আরজু আলম বলেন, স্কুল, বিডিও, ফায়ার ও পুলিসের অনুমতি নিয়েই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। স্বপ্নাদেশে পাওয়া এই মেলা গত ৪৪ বছর ধরে স্কুলেই হয়ে আসছে। গ্রামের মানুষের আবেগও রয়েছে মেলাকে ঘিরে। কিন্তু পড়ুয়াদের ছুটি দিয়ে মেলার আয়োজনে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে বলায় তিনি বলেন, স্কুল তো সকলের। ছেলেমেয়েদের একটু হয়তো বেগ পেতে হবে। কিন্তু গ্রামের ভালোটাও তো দেখতে হবে। এই মেলা না করলে গ্রামে কোনও অঘটন ঘটে যাবে। তাছাড়া স্কুলের মধ্যে শুধু নাগরদোলা, চা, মোগলাইয়ের দোকান করা হয়েছে। তবে ফি বছর লোকসমাগম বাড়ায় আগামী বছর থেকে বিকল্প মাঠে মেলাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই মাদ্রাসায় দু’ হাজারেও বেশি পড়ুয়া। প্রধান শিক্ষক বলেন, গ্রামের সমস্ত মানুষের আবেগ জড়িত আছে এই মেলার সঙ্গে। তাই মেলা উপলক্ষ্যে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সরকারি ভাবে ৬৫টি ছুটি পাওয়া যায়। এই ক’ দিনের ছুটি তার মধ্যেই থাকবে। বৃহস্পতিবার মহাবীর জয়ন্তীর সরকারি ছুটি রয়েছে। মাদ্রাসার জন্মলগ্ন থেকে এভাবেই মেলা হয়ে আসছে।
মুরারই ১ ব্লকের বিডিও বীরেন্দর অধিকারী বলেন, মাদ্রাসার পাশেই যেহেতু মাজার, তাই দীর্ঘদিন ধরে স্কুল ক্যাম্পাসেই মেলা হয়ে আসছে। তবে স্কুল ছুটি, বা রুমের মধ্যে খাবারের স্টলের বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।