• বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে পুরসভার আয় বাড়ল প্রায় ১০৮ শতাংশ
    বর্তমান | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রেকর্ড পরিমাণ আয়বৃদ্ধি করল কলকাতা পুরসভা। সদ্যসমাপ্ত অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) এই খাতে প্রায় ১০৮ শতাংশ (১০৭.৮০) রাজস্ব বৃদ্ধি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের নিরিখে দেখলে এই বৃদ্ধির হার প্রায় হাজার শতাংশ (৯৭৫.১৫)। এই সাফল্য পুরসভার ইতিহাসে সর্বকালীন রেকর্ড বলেই জানাচ্ছেন পুরকর্তারা। এ সংক্রান্ত রিপোর্টও ইতিমধ্যে পুর-কমিশনারের কাছে জমা পড়েছে। মূলত, বেসরকারি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রের জঞ্জাল করের সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্সকেও যুক্ত করে দেওয়ার ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে আয় লাফিয়ে বাড়ছে বলে মনে করছে পুরসভা কর্তৃপক্ষ। পুর-কমিশনারের কাছে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে জজ্ঞাল অপসারণ বিভাগের আয় দেখানো হয়েছে ৪৪ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা। যদিও আয়বৃদ্ধির এই হিসেব নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। জঞ্জাল সাফাই ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের দাবি, এই খাতে আয় হয়েছে ৭৫ কোটি ৫৬ লক্ষ ৯৬ হাজার ২৮২ টাকা। 

    শহরের বিভিন্ন ছোট-বড় খাবারের দোকান, হোটেল, পানশালা, রেস্তরাঁ, বেসরকারি হাসপাতাল সহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের রোজকার ময়লা বা বর্জ্য সাফাই করে কলকাতা পুরসভা। নিয়মিত পুরসভার গাড়ি গিয়ে এইসব বর্জ্য সংগ্রহ করে। তার জন্য নির্দিষ্ট হারে নেওয়া হয় জঞ্জাল কর। বছর তিনেক হল, জঞ্জাল করের সঙ্গে লাইসেন্সও যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, জঞ্জাল করের সঙ্গেই বছর শেষে মেটাতে হবে ট্রেড লাইসেন্সের টাকাও। সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘আগে অনেক সংস্থাই জঞ্জাল করের টাকা দিতে ঢিলামি করত। কেউ কেউ বছরের পর বছর ধরে টাকা দিত না। ব্যবসা করছে, এদিকে পুরসভাকে জজ্ঞাল সাফাইয়ের ট্যাক্স দিচ্ছে না। এসব কারণে প্রচুর টাকা বকেয়া পড়েছিল। পুরসভার আয় ধাক্কা খাচ্ছিল। সেই সমস্যা মেটাতেই এই পদক্ষেপ।’ বর্তমানে জঞ্জাল কর এবং লাইসেন্সের টাকা এক সঙ্গে দেওয়া বাধ্যতামূলক। বর্জ্য-কর না দিলে লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হবে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই করের টাকা মেটাতে হচ্ছে। 

    পাশাপাশি, এই খাতে নির্মাণ-বর্জ্য, বায়ো সিএনজি, সার কারখানা থেকে প্রাপ্ত আয়ও ধরা হয়েছে। তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে জঞ্জাল সাফাই বাবদ পুরসভার ২১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা আয় হয়েছিল, সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তার দ্বিগুণেরও বেশি, ৪৪ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা হয়েছে। বিভাগীয় কর্তারা জানাচ্ছেন, এই আয় আরও অনেক বেশি। কারণ, ট্রেড লাইসেন্স, নির্মাণ-বর্জ্য সংগ্রহের টাকা কিংবা বড় বড় আবাসনে কম্প্যাক্টর স্টেশন বসানোর টাকাও জঞ্জাল সাফাই বিভাগ সংগ্রহ করে। তাহলে সেই টাকা কেন লাইসেন্স কিংবা বিল্ডিং বিভাগের খাতে দেখানো হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। গত ১ এপ্রিল থেকে জঞ্জাল করের হারও বিভিন্ন ব্যবসার ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ শতাংশ বেড়েছে। ফলে আগামী অর্থবর্ষ (২০২৫-২৬) শেষে এই আয় আরও অনেকটা বাড়বে বলে আশাবাদী তাঁরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)