এমন কাণ্ডের দেখা বলিউডি থ্রিলারে মেলে। একজনকে খুন করতে বাকি দু’জনের প্ল্যানিং কিন্তু শেষ পর্যন্ত দান গেল উল্টে। পর্দার থ্রিলারকে হার মানানো রোমহর্ষক কাণ্ড ঘটে গেল সোনারপুর থানার মাহিনগরে। সূত্রের খবর, প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুনের ছক কষেছিল স্ত্রী। কিন্ত পরিকল্পনা স্বামী জেনে ফেলায় পাল্টা প্রাণ খোয়াতে হল স্ত্রীকে। তাঁকে হত্যার পর নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করল স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানা এলাকার রাজপুর সোনারপুর পুরসভার মাহিনগরে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে সোনারপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, ক্যানিংয়ের হেরোভাঙা এলাকার বাসিন্দা বাপি গায়েনের সঙ্গে বছর আটেক আগে বিয়ে হয় প্রতিবেশী প্রিয়াঙ্কা গায়েনের। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কে থাকার পর করে বিয়ে করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা ও বাপি। বিয়ের পর বাপি পার্ক সার্কাসের একটি কারখানায় চাকরি পান। তারপর স্ত্রীকে নিয়ে সোনারপুরের মাহিনগরে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। সেই ভাড়াবাড়িতে আসার পরই মন বদল প্রিয়াঙ্কার।
ভাড়াবাড়িতে বাপি-প্রিয়াঙ্কার পাশের ঘরেই থাকত সুপ্রকাশ দাস ও তার স্ত্রী। সূত্রের খবর, ধীরে ধীরে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুপ্রকাশের। শুরু হয় উদ্দাম পরকীয়া। তবে এই প্রেম বেশিদিন চাপা থাকে না। বিষয়টি জানতে পেরে অশান্তি শুরু হয় বাপি-প্রিয়াঙ্কার সংসারে। এরই মধ্যে স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায় সুপ্রকাশ। তবে দূরে গেলেও সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি তাদের। দু'জনে মাঝে মাঝে ধানমাঠ এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে একসঙ্গে সময় কাটাতেন। এই খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বাপি।
জানা গিয়েছে, স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করছিল প্রিয়াঙ্কা ও সুপ্রকাশ। সেই কথা ফোনে কথা বলার সময় শুনে ফেলেন বাপি। তারপরেই নিজের জীবন বাঁচাতে এবং প্রতিশোধ নিতে সিদ্ধান্ত নেন স্ত্রীকে খুন করার। এরপরই প্ল্যানমাফির রাতে স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়তেই শ্বাসরোধ করে খুন করে বাপি বলে অভিযোগ। স্ত্রীকে খুনের পর নিজের অপরাধ স্বীকার করে সোজা সোনারপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে সে।
পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। অভিযুক্ত বাপিকে জেরা করে ঘটনার সম্পূর্ণ তথ্য জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া। প্রতিবেশীদের একাংশ জানিয়েছে, বাপি-প্রিয়াঙ্কার মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। তবে এমন ঘটনা ঘটবে তা কেউ কল্পনাও করেনি। তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরকীয়া থেকেই এই নারকীয় পরিণতি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে সোনারপুর থানার পুলিশ।