এই সময়: আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ‘রাত দখল’ কর্মসূচি দেখেছিল কলকাতা। পরে ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চেও সমাজের নানা স্তরের মানুষকে পাশে পেয়েছিলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। মাঝে মাস কয়েকের ব্যবধান। আরজি কর আন্দোলনের স্মৃতি উস্কে দিচ্ছেন চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকারা। শহিদ মিনারে ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে সামিল তাঁরা।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরেও নিঃসংশয় হতে পারেননি শিক্ষক–শিক্ষিকাদের বড় অংশ। মিটিং থেকে ফিরে শহিদ মিনার চত্বরে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছেন ‘যোগ্য’ প্রার্থীরা। তাঁদের বক্তব্য — ডু অর ডাই। তাঁদের আন্দোলন আরজি করকেও ছাপিয়ে যাবে বলে কারও কারও দাবি।
ক্ষোভের কেন্দ্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্য সরকার। যদিও সোমবার মুখ্যমন্ত্রী এই শিক্ষকদের সাফ জানিয়েছেন যে, বেঁচে থাকতে ‘যোগ্যদের’ চাকরি হারাতে দেবেন না তিনি। এ জন্য বিকল্প প্ল্যান যে তৈরি, সে ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। তার পরেও শহিদ মিনারের মাঠে কেন? তেহট্টের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমার ১০ মাসের সন্তান রয়েছে। দশজন মানুষ আমার উপরে নির্ভরশীল। আমার কী দোষ? যে এসএসসি দুর্নীতি করছে, তারা কী ভাবে যোগ্য–অযোগ্য ঠিক করবে?’ উত্তর ২৪ পরগনার এক বাসিন্দা চাকরি পেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের স্কুলে। এ দিন শহিদ মিনারের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে তিনি বলেন, ‘বাড়ি ফিরব কোন মুখে? আমার দিকে তাকিয়ে গোটা পরিবার। রাতে ঘুমোতে পারব না।’
এরই মধ্যে কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আস্থা রাখার কথা বলেন। তাতে এঁদের উপরেই পাল্টা ক্ষোভ উগরে দেন অনেকে। এক শিক্ষিকা পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘সরকার এতদিন কিছু করেনি কেন? তা ছাড়া সাধারণ মানুষ যদি ডাক্তারদের পাশে থাকতে পারেন, তা হলে যোগ্য শিক্ষকদের পাশে কেন থাকবেন না?’ এখন এঁরা আন্দোলনের কোন পথ ধরেন, সেটাই দেখার।