প্রাথমিক দুর্নীতি মামলা থেকে সরলেন বিচারপতি সৌমেন সেন
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিলের রেশ এখনও কাটেনি। তারই মাঝে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত ৩২ হাজার জনের চাকরি বাতিলের মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন। যদিও এক্ষত্রে বিচারপতি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন। ফলত এই ডিভিশন বেঞ্চে আর মামলা হবে না। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের কাছে এই মামলা যাবে। তাঁর অধীনে নতুন ডিভিশন বেঞ্চ তৈরি হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি সেখানেই হবে।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছিল। সেক্ষত্রেও শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির প্রসঙ্গ উঠেছিল। ২০১৪ সালের প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ২০১৬ সাল নাগাদ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁদের মধ্যে থেকে ৪২,৯৪৯ জনকে চাকরি দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে থেকে ৩২ হাজার জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
অভিযোগ উঠেছিল, আদালতের নির্দেশ মেনে নম্বর বিভাজন-সহ যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল, সেখানে কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। সঠিকভাবে ইন্টারভিউ এবং অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়নি। এই অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই চাকরি বাতিলের রায় জানিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারপতি। আর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছিল রাজ্য। পর্ষদের পাল্টা দাবি ছিল, কোনো অপ্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। সেইসময় এর প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ৩২ হাজার প্রার্থীও। সঠিক নিয়োগ প্রক্রিয়াতে চাকরি পেয়েছেন বলে তাঁরা দাবি করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। মামলা বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল।
কিন্তু ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সেই মামলা থেকেই এবার সরে দাঁড়িয়েছেন বিচারপতি। তাই সদ্য চাকরিহারাদের নিয়ে রাজ্যে যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি ঘিরে ফের নতুন আতঙ্কের আবহ তৈরি হয়েছে।