• ‘অযোগ্য’-দের তালিকায় রয়েছে নাম, মঙ্গলে স্কুলে যাবেন তৃণমূলের সেই অঞ্চল সভাপতি
    এই সময় | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
  • নেতাজি ইন্ডোরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারাদের মধ্যে যোগ্যদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এই বার্তার পরেও স্বস্তি ফেরেনি এই কাজ হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের।

    মুখ্যমন্ত্রীর সভা থেকে ফেরার পরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চাকরিহারা শিক্ষকদের তিনটি ভাগে ভাগ হতে দেখা গিয়েছে। একদল শিক্ষক স্কুলে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, শুধু মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস নয়, তাঁরা পড়ুয়াদের প্রতি নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করতে চান।

    একদল শিক্ষক অবশ্য জানিয়েছেন, সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা স্কুলে যাবেন না। তাঁরা ‘আন্দোলনে পথে হাঁটবেন’। অন্য একটি অংশ, যাঁরা ভিন্ন সরকারি চাকরি থেকে এসএসসি-র চাকরিতে যোগ দিতে এসেছিলেন, তাঁরা ফিরে যেতে চাইছেন পুরোনো কর্মস্থলে।

    সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারাদের তালিকায় নাম ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা ব্লকের জলচকের অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অজয় মাজিরও। তিনি সবং ব্লকের মোহাড় ব্রহ্মময়ী হাইস্কুলের বাংলা বিষয়ের নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক। উল্লেখযোগ্য ভাবে, তাঁর নাম ‘টেন্ডেড’ (প্রমাণিত দোষী)-দের তালিকাতেও রয়েছে। আদালতের নির্দেশ, বেতনও ফেরাতে হবে তাঁকে। তবে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরে মঙ্গলবার স্কুলে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

    মঙ্গলবার সকালে ‘এই সময় অনলাইন’-কে অজয় মাজি বলেন, ‘যা বলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আমি স্কুলে যাব। ছাত্রছাত্রীরা অধীরভাবে অপেক্ষা করছে।’ ওই স্কুলে অজয়-সহ মোট ৬ জন শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। অজয়ের দাবি, ‘আশা করছি, আজ সকলেই স্কুলে আসবেন।’

    অন্যদিকে, অঙ্কে ‘স্বর্ণপদক’ পাওয়া করামপুর ভদ্রকালী গান্ধী বিদ্যাপীঠের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক অভিজিৎ গিরি, সবংয়ের দেউলি কলসবাড় রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের রসায়নের শিক্ষক কৃষ্ণগোপাল চক্রবর্তী, চাঙ্গুয়াল হাইস্কুলের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক অর্জুন দাস-সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা জানিয়েছেন, তাঁরা মঙ্গলবার স্কুলে যাবেন না। তার বদলে তাঁরা মেদিনীপুর শহরের কলেজ কলেজিয়েট মাঠ থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গিয়েছে।

    মঙ্গলবার সকালে অভিজিৎ গিরি, কৃষ্ণগোপাল চক্রবর্তী, অলক জানা ‘এই সময় অনলাইন’-কে ফোনে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যোগ্য শিক্ষকদের দিশা দেখাতে পারেননি। তাই স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা স্কুলে যাব না।’ অন্যদিকে, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন অতনু দত্ত, কল্যাণ মাইতি, দেবাশিস খান। প্রাথমিকের শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে এসেছিলেন প্রসূন দত্ত-সহ আরও অনেকেই। তাঁরা এ দিন বলেন, ‘নতুন নিয়োগ হতে হয়তো এক বছর সময় লাগতে পারে। আমরা পুরনো চাকরিতে ফিরে যাব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

    (তথ্য সহায়তা: মণিরাজ ঘোষ)

  • Link to this news (এই সময়)