রাজ্যের স্বস্তি, অতিরিক্ত শূন্যপদের CBI তদন্ত নয়, হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ সুপ্রিম কোর্টের
আজ তক | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
পাঁচদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মীবৃন্দ ৷ নিয়োগ দুর্নীতিতে আরেকবার মুখ পুড়েছে রাজ্যের ৷ এদিন শিক্ষক নিয়োগে অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে ৷ এদিন অবশ্য রাজ্য সরকারকে স্বস্তি দিয়ে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরিতে কোনও বেনিয়ম হয়নি, ফলে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করা হল।
মঙ্গলবার এসএসসি-র অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালতে। এদিন সকালে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একে রাজ্য সরকারের আপাত জয় বলেই মনে করা যেতে পারে। এসএসসি-র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রায় ছ’হাজার অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় এবং রাজ্য মন্ত্রিসভারও অনুমোদন ছিল ওই সিদ্ধান্তে। তবে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ওই অতিরিক্ত শূন্যপদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত আইনসঙ্গত নয়। এমনকি প্রয়োজনে সেই সিদ্ধান্তে যুক্ত মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই, এমন নির্দেশও দেওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টের তরফে।
২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পরে হঠাৎ স্কুলের চাকরিতে বাড়তি পদ (সুপার নিউমেরারি পোস্ট) তৈরি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, ওয়েটিং লিস্টে নাম থাকা আন্দোলনরতদের জন্যই ওই পদ তৈরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাতে সম্মতি দিয়েছিল রাজ্যের মন্ত্রিসভাও। গত বছর এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, সুপার নিউমেরারি পদ তৈরি করার বিষয়টির তদন্ত করবে সিবিআই। প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে এই তদন্তকারী সংস্থা, দেওয়া হয়েছিল এই নির্দেশও। সেই নির্দেশই এদিন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার শুনানি শুরু হলে হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। এদিন রায়দান করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ১৯৯৭ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন অ্যাক্ট অনুসারে কমিশনের চেয়ারম্যান সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরির সুপারিশ করেছিলেন। অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছিল ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের চাকরি দিতে। ক্যাবিনেট নোটে উল্লেখ করা হয়েছিল এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে কি না তা নির্ধারিত হবে কলকাতা হাইকোর্টের মামলার রায়ের ওপর। আর রাজ্য মন্ত্রিসভার সেই সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। ফলে এই সিদ্ধান্ত আদালতকে এড়িয়ে নেওয়া হয়েছিল তা বলা যায় না। তাছাড়া মন্ত্রিসভার কিছু স্বাধিকার থাকে। সেখানে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তাছাড়া মামলাকারীরা কেউ সুপার নিউমেরারি পদ তৈরিক সিদ্ধান্তে তদন্ত চাননি। কলকাতা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই নির্দেশ দিয়েছিল। একথা বলে সুপার নিউমেরারি পদ তৈরিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি।