• সুব্রত বক্সির মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচার, চিকিৎসককে ফোন অভিষেকের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
  • রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে জটিলতা, তা অস্বীকার করার নয়। কখনও সামান্য বিরোধ, আবার কখনও সম্প্রীতি। মোটামুটি সব রাজনৈতিক দলেই এই ছবি দেখা যায়। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও এর ব্যতিক্রম নয়। তৃণমূলের ‘নবীন-প্রবীণ’ রসায়ন বরাবরই রাজনীতির চর্চায় থাকে কারণ তৃণমূলের দুই স্তম্ভ অর্থাৎ দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় হলেন যথাক্রমে দলের প্রবীণ এবং নবীন মুখ। উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক, সমঝোতা দলের অন্যতম শক্তি।

    উল্লেখ্য, সুব্রত বক্সির মেরুদণ্ডে একটা ছোট সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেই তিনি ভর্তি হয়েছেন পূর্ব কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। আগে থেকেই ঠিক ছিল, ছোট অপারেশনের মাধ্যমে সেটির নিরাময়ের চেষ্টা করবেন চিকিৎসকরা। সেই মোতাবেক গত বৃহস্পতিবার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান সুব্রত বক্সি। তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় খোঁজখবর নিতে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় সরাসরি ফোন করেছিলেন রাজ্য সভাপতির চিকিৎসককেই। জানা গিয়েছে, আদর্শ অনুজের মত অভিষেক চিকিৎসককে বলেছেন, ‘উনি (সুব্রত বক্সি) দু’দিন পরই বলবেন, তৃণমূল ভবনে যেতে হবে। এই কাজ রয়েছে, ওই কাজ রয়েছে। কিন্তু কোনও কথা শুনবেন না। সম্পূর্ণ সুস্থ না হলে বক্সি জ্যেঠুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়বেন না।’ অ্যাপোলো হাসপাতালে সুব্রত বক্সির মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচারকারী ডাঃ সঞ্জয় বিশ্বাস অভিষেকের কথায় সম্মতিও জানিয়েছেন।

    প্রসঙ্গত, সংসদে ওয়াকফ বিল নিয়ে বিতর্ক ও ভোটাভুটির জন্য হুইপ জারি করে রেখেছিল তৃণমূল। সুব্রত বক্সি রাজ্যসভার সদস্য। নিয়ম অনুযায়ী, দল হুইপ জারি করলে সদস্যদের বাধ্যতামূলক ভাবেই সভায় থাকতে হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারের জন্য তিনি যে সংসদে যেতে অপারগ তা দলকে জানিয়ে দিয়েছিলেন সুব্রত বক্সি। তাতে সমস্যাও হয়নি। এই বিষয়টি শ্রুতিগোচর হতেই রাজ্য সভাপতির স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে তৎপর হন অভিষেক। এর মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই কোনো ‘রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ’ দেখছে না শাসক শিবির। তৃণমূলের প্রবীণ এবং নবীন মুখের এই রাজনৈতিক সৌজন্যতা, সুসম্পর্ক দলকে ঐক্যবদ্ধ করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে, তা বলাই বাহুল্য।

    এর আগেও ‘ভুতুড় ভোটার’ শনাক্তকরণে অভিষেকের ডাকা মেগা ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি। পরবর্তীতে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে আয়োজিত ঈদের দাওয়াতে সুব্রত বক্সি এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায় উভয়ই উপস্থিত হয়েছিলেন। এমনকি সুব্রত বক্সির পাশের আসনেই বসেছিলেন অভিষেক। রাজনৈতিক মহল বলছে, এসবের মধ্যে ‘রাজনৈতিক জলঘোলা’ না থাকলেও ‘রাজনৈতিক সৌজন্যতা’ নিশ্চয়ই রয়েছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)