অর্ণব দাস, বারাকপুর: কিশোরী মেয়েদের দিকে কুনজর পড়েছিল বিকৃতকাম পুরুষদের। বন্দুক হাতে মায়ের কাছে গিয়ে তারা দাবি করেছিল, ‘ঘরের মেয়ে দুটোকে আমাদের হাতে তুলে দে।’ বিধবা মা কোনওভাবেই সেই দাবি মেনে নেননি। কাতর অনুরোধে জানিয়েছিলেন, ‘ওদের ছেড়ে দাও।’ মনে গলেনি দুষ্কৃতীদের। প্রতিবাদী মাকেই আমবাগানে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়। ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক শোরগোল খড়দহের পাতুলিয়া এলাকায়। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। তা জেনে আবার বন্দুক হাতে দুষ্কৃতীরা অভিযোগ তোলার জন্য চাপ দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনার তদন্তে নেমে রহড়া থানার পুলিশ ২ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পাতুলিয়া পঞ্চায়েতের ডাঙ্গা ডিঙলা এলাকার বাসিন্দা ওই বিধবা মহিলা দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন। ঘটনার পর তিনি জানান, এলাকার চার যুবক, যারা হামেশাই চুরি-ছিনতাই, অপরাধমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত, তারা তাঁর বাড়িতে দিয়ে দাবি করে বসে, বাড়ির দুই মেয়েকে নাকি তাদের হাতে তুলে দিতে হবে, সন্তুষ্ট করতে হবে। তাতে রাজি হননি মহিলা। প্রতিবাদ করেন। তাতেই ‘শাস্তি’ জোটে তাঁরই কপালে। মহিলাকেই তুলে নিয়ে গিয়ে আমবাগানের মধ্যে সকলে মিলে যৌন হেনস্তা করে বলে অভিযোগ তাঁর। ঘটনার পর চম্পট দেয় চারজন। বিষয়টা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পাড়ার মহিলারা। তাঁদের সাহসে ভর করে রহড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা।
কিন্তু সেই খবর পৌঁছে যায় দুষ্কৃতীদের কানে। অভিযোগ, বন্দুক হাতে আলামিন, আকবর নামে দু’জন নির্যাতিতাকে শাসিয়ে যায়, অভিযোগ তুলে না নিলে বিপদ হবে! তাতে ভয় পেলেও অবশ্য পিছু হঠেননি নির্যাতিতা। পুলিশও অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে দ্রুত তদন্তে নেমে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের নাম জাবেদ, ছোটু। বাকিরা পলাতক। নির্যাতিতার পাশে দাঁড়িয়েছেন পাতুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সাফিয়ার রহমান। পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। নজর রাখছে পুলিশও। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় মহিলারা।