‘ওঁর জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট’, খোঁচা সৌগতর, কল্যাণের পালটা, ‘ওঁর কোনও ক্যারেক্টার আছে?’
প্রতিদিন | ০৮ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহুয়া মৈত্র, কীর্তি আজাদের পর এবার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম সৌগত রায়! এবার বাকযুদ্ধে জড়ালেন তৃণমূলের দুই প্রবীণ সাংসদ। মহুয়া মৈত্রকে কটূক্তি করার অভিযোগ উঠেছে শ্রীরামপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে। ভাইরাল হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশটও। আর এই কাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে অভিযোগ করেছেন দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। একইসঙ্গে দলের চিফ হুইপ পদ থেকে শ্রীরামপুরের সাংসদকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তিনি। এর পালটা কল্যাণের খোঁচা, নারদ কাণ্ডে টাকা নেওয়ার সময় ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি? ওঁর কোনও ক্যারেক্টার আছে নাকি? সবমিলিয়ে কল্যাণ-সৌগতর বাকবিতণ্ডা তুঙ্গে।
দিল্লির নির্বাচন কমিশনের সামনে থেকে সমস্যার সূত্রপাত। যার জল গড়ায় দলের সাংসদদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। ভাইরাল হয় সেই চ্যাটের স্ক্রিনশটও। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। বলেন, “এই ধরনের ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল কল্যাণের উপর। তিনি তাঁর ক্ষমতায় অপব্যবহার করেছিলেন। সবাইকে বলতে দেন না। কেউ বলতে চাইলে দুর্ব্য়বহার করেন। আমার মনে হয়, দলের চিফ হুইপ পদ থেকে ওঁকে সরিয়ে দেওয়া উচিত।” সৌগতর এই কথাতেই ফুঁসে ওঠেন কল্যাণ। প্রশ্ন করেন, “কোনও পাওয়ারের অপব্যবহার করেছি? ওয়াকফ বিল নিয়ে দিদি যা বলেছে তাই বলেছি। আমাদের দলে নেত্রী যা বলেন তাই হয়।” একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “২০০১ সাল থেকেই সৌগত আমাকে পছন্দ করে না।”
নারদ কাণ্ডে টাকা নেওয়ার ভিডিও নিয়েও সৌগত রায়কে কার্যত তুলোধোনা করেন কল্যাণ। বলেন, “অনেক কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। সৌগত রায়ের জন্য নষ্ট হয়নি? সৌগতর নারদার টাকা খাওয়ার জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি?” তাঁর আরও সংযোজন, “সৌগত রায় তো সেই সময় পালিয়ে যেত। ২০১৬-২০১৭ সালে ওঁকে দেখে সবাই চোর-চোর বলত। নারদ কাণ্ডে যাদের নাম জড়িয়েছিল, তাদের একজনও বসে থাকত? আমাকে শুনতে হত। নারদ কাণ্ডে সৌগত রায়রা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।” এরপরই তাঁর খোঁচা, “সৌগত রায়ের কোনও ক্যারেক্টার আছে নাকি? এখানে এক কথা বলেন, ওখানে আরেক কথা বলেন।” সৌগত প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি ঘনিষ্ঠ বলেও দাবি করেছেন কল্যাণ। এই ইস্যুতে কল্য়াণকে পালটা তোপ দেগে সৌগত বলেন, “ওঁর রুচিবোধ কম, সভ্যতা-শ্লীলতাও নেই। একটা দুর্মুখ। নারদ কাণ্ডে টাকা নিলে, সেটা কেন কোর্টে প্রমাণ করতে পারল না?” পরিশেষে শ্রীরামপুরের সাংসদ বলছেন, “দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যদি বলেন ভুল করেছি, রাজনীতি ছেড়ে চলে যাব। আমার রাজনীতি নিয়ে অত কিছু নেই। কিন্তু কারও অসভ্যতা সহ্য করব না।”
পুরো বিষয়টি দলের অন্দরের বিষয়, প্রকাশ্যে মুখ খোলা উচিত নয় বলেই মত তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। তিনি বলেন, “তৃণমূল একটা পরিবার। দশটা বাসন থাকলে ঠোকাঠুকি লাগেই। বিষয়টা দল দেখছে। কল্যাণদা সিনিয়র নেতা। কোনও কারণে রুষ্ট হয়েছেন। এটা দিল্লির সংসদীয় দলের বিষয়। আমি এর বেশি কিছু বলব না। এধরনের কথা প্রকাশ্যে না আলোচনা করাই ভালো।”