‘বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে’। এই প্রবাদ বাক্য যেন এখন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবনের সারসত্য। এসএসসি মামলায় যে দিন সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা করল, সে দিনও উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা দেখেছেন শিক্ষক অমিত মণ্ডল। সেই খাতা এখন কী করবেন, কোথায় যাবেন— সেটা নিয়ে দোলাচলে ছিলেন। মঙ্গলবার যদিও তিনি নিয়ম মতোই নির্দিষ্ট জায়গায় খাতা জমা দিয়ে এসেছেন।
হুগলির চন্দ্রহাটি দিলীপ কুমার হাইস্কুলের পলিটিক্যাল সায়েন্সের শিক্ষক অমিত মণ্ডল। হুগলির কানাগড়ে বাড়ি তাঁর। ২০১৮ সালে চাকরিতে যোগ দেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে। সেখানে আড়াই বছর চাকরি করে ‘উৎসশ্রী’ পোর্টালে আবেদনের মাধ্যমে চলে আসেন চন্দ্রহাটিতে। বাবা অমর মণ্ডল পেশায় রাজমিস্ত্রী। অনেক কষ্ট করে ছেলেকে বড় করেছেন। ভেবেছিলেন, চাকরি পাওয়ার পর কিছুটা সুরাহা হবে। কিন্তু হায়! সবটাই এখন দোলাচলে।
চিন্তায় অমিত। অসহায় গলায় বললেন, ‘সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত ছিলাম। স্কুলেও হয়তো যাব। উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখা হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার চন্দননগরে হেড এক্সমিনারের কাছে জমা দিয়ে এসেছি।’
উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা দেখেছেন অমিত। সেটাও কি অবৈধ? প্রশ্ন অমিতের। তাঁর কথায়, ‘আমার চাকরি অবৈধ অথচ আমি উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখলাম সেটা বৈধ! কী ভাবে জানি না।’ হুগলি জেলায় যে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষা কর্মীদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি শুভেন্দু গড়াই। তিনি বলেন, ‘অনেকেই স্কুলে যোগ দিচ্ছেন। আমরা চাইছি, স্কুলের স্বাভাবিক পড়াশোনার পরিবেশ বজায় থাকুক।’