• চলতি বছর দ্বিগুণ আমের ফলনের সম্ভাবনা, দাম কতটা কমতে পারে?
    আজকাল | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুকুলে ছেয়ে গেছে মুর্শিদাবাদের আমের বাগানগুলো। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের অনুমান গত বছরের তুলনায় এবছর মুর্শিদাবাদ জেলার আমের বাগানগুলোতে প্রায় দু'গুণ আমের ফলন হবে‌।  তার ফলে কমতে পারে আমের দাম। 

    ঐতিহাসিকেরা বলেন, মোগল নবাবদের সময়ে মুর্শিদাবাদ জেলার আমের বাগানগুলোতে প্রায় ২৫০টি বিভিন্ন প্রজাতির আম উৎপাদন হত। আম উৎপাদন এবং আমের গুণমান নিরীক্ষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলেন, মুর্শিদাবাদের আমের স্বাদ, দেশ এবং রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে উৎপাদিত আমের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। মুর্শিদাবাদ জেলার আমকে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে উৎপাদিত আমের থেকে পৃথক করার জন্য নবাবরা একসময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চারা নিয়ে এসে 'গ্রাফটিং' পদ্ধতিতে নতুন প্রজাতির শঙ্কর আম গাছ তৈরি করেছিলেন। 

    এখনও মুর্শিদাবাদ জেলার কহিতুর, কালাপাহাড়, চন্দন কোষা, মোহনভোগ, নবাবপসন্দ-সহ আরও কয়েকটি বিলুপ্ত প্রজাতির আম মানুষের জিভে জল এনে দেয়।মুর্শিদাবাদ জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক প্রিয়রঞ্জন সান্নিগ্রাহী জানান, 'এবছর মুর্শিদাবাদ জেলার প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। আমরা আশা করছি প্রায় ২.২০ লক্ষ মেট্রিক টন আমের ফলন আমরা পাব। গত বছর মুর্শিদাবাদ জেলায় আমের ফলন ছিল মাত্র এক লক্ষ মেট্রিক টনের কাছাকাছি।' 

    তিনি জানান, 'এখনও পর্যন্ত জেলার যা আবহাওয়া রয়েছে তা আম চাষের জন্য অত্যন্ত অনুকূল। এইরকম আবহাওয়াতেই মুকুল থেকে ভালো ফলন হয়। দুপুরের দিকে কিছুটা গরম বাড়লেও তা এখনও তাপপ্রবাহের আকার নেয়নি। এর পাশাপাশি কয়েকদিন আগে অল্প বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা আমের ভাল ফলনের জন্য অত্যন্ত জরুরি।' প্রিয়রঞ্জন জানিয়েছেন, 'এই মুহূর্তে গাছগুলোতে যে সংখ্যায় মুকুল রয়েছে স্বাভাবিক নিয়মে এত মুকুল থাকবে না। গাছ থেকে বেশ কিছু মুকুল প্রাকৃতিক নিয়মে ঝরে পড়বে। আমরা আশা করছি মে মাসের ১৫ -২০ তারিখের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলার আম বাজারে বিক্রির জন্য চলে আসবে। তবে মুর্শিদাবাদ জেলায় আমের ফলন গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও আমের দাম কতটা কমবে বা আদৌ কমবে কিনা তা নির্ভর করবে অন্য রাজ্যে আমের কতটা ফলন হচ্ছে তার উপর। দক্ষিণ ভারত এবং অন্যান্য কয়েকটি রাজ্য থেকে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে আম রাজ্যের বাজারে আসতে থাকে তাহলে মুর্শিদাবাদের আমের দাম কিছুটা কমতে পারে।' জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক জানান, 'মুর্শিদাবাদ জেলায় আমের যে বাগানগুলো রয়েছে তা মূলত নবাবদের রসনা তৃপ্তির জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তার ফলে এখানে আমের বাগানগুলোতে কোনও একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির আম গাছের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছ দেখতে পাওয়া যায়। মুর্শিদাবাদ জেলার সাদুল্লা, চম্পা-সহ আরও কয়েকটি প্রজাতির আম বাজারে অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমরা আশা করছি এই সমস্ত আম এবছর বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাবে।' আমের মুকুল থেকে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলন চাষিরা পান তা সুনিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই উদ্যানপালন দপ্তরের তরফ থেকে লিফলেট এবং বিভিন্ন রকমের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)