সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুরু হল মধু সংগ্রহের কাজ। মঙ্গলবার থেকে রায়দিঘী রেঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে মধু সংগ্রহের সূচনা করা হয়। 

বন দপ্তর  জানিয়েছে, এ বছর মোট ৫৫টি দলকে মধু সংগ্রহের জন্য পারমিট দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি দলে সদস্য সংখ্যা পাঁচ থেকে সাত জনের মধ্যে। প্রথম পর্যায়ে ১৫ দিনের অনুমতি নিয়ে তাঁরা জঙ্গলে প্রবেশ করবেন। মধু সংগ্রহ মৌলেদের অন্যতম প্রধান জীবিকা হলেও এই কাজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বাঘের আক্রমণ কিংবা জঙ্গলের অন্যান্য বিপদের কথা মাথায় রেখেই এ বার নিরাপত্তায় জোর দিয়েছে বন দপ্তর। 

মৌলেদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জঙ্গলের কোন কোন অংশে তাঁরা যেতে পারবেন এবং কোন অংশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জঙ্গলে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য বন দপ্তরের পেট্রলিং চলবে নিয়মিত। পাশাপাশি মৈপীঠ উপকূল থানার পুলিশের তরফ থেকেও নজরদারি চালানো হবে।

সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ারের ডিরেক্টর নীলাঞ্জন মল্লিক বলেন, ‘জীবনের দাম সবকিছুর থেকে অনেক বেশি। তাই মৌলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রথম কাজ।’ সমস্ত মৌলেদের ফোন নম্বর বন দপ্তরের কাছে রাখা হয়েছে এবং বন দপ্তরের জরুরি নম্বর তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কারও কোনও সমস্যা হলে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন তাঁরা। 

নিরাপত্তার পাশাপাশি মৌলেদের জন্য ইনসিওরেন্স-এর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কেউ আহত হলে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং কারও মৃত্যু হলে পরিবার পাবে ৫ লক্ষ টাকা। এছাড়াও মৌলেদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে মুখোশ, গ্লভস, প্রয়োজনীয় ওষুধ। প্রতিটি দলের কাছে থাকা রেডিও-র মাধ্যমে তাঁরা আবহাওয়া এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপডেট পেয়ে যাবেন। 

মধুর দামও এ বার বাড়ানো হয়েছে। গতবারের তুলনায় কেজি প্রতি ৫ টাকা করে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বন দপ্তর মনে করছে এতে মৌলেরা কিছুটা হলেও আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন। এ বারের লক্ষ্য ১০ টন মধু সংগ্রহ।