বর্ষার আগে আত্রেয়ী নদীর বাঁধের কাজ করবে সেচদপ্তর, বরাদ্দ ৮৭ লক্ষ টাকা
বর্তমান | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, পতিরাম: অবশেষে ঘুম ভাঙল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সেচদপ্তরের। আত্রেয়ী বাঁধে বিপত্তির পর কাজ শুরু করেও জল আটকাতে পারেনি। বর্ষার আগে অস্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করতে চলেছে সেচদপ্তর। এই কাজের জন্য ৮৭ লক্ষ টাকার টেন্ডার করা হয়েছে।
সেচদপ্তর সূত্রে খবর, স্থায়ীভাবে বাঁধের মেরামত করতে সুনির্দিষ্ট ডিজাইন এবং পরিকল্পনার প্রয়োজন। বর্ষার আগে দীর্ঘমেয়াদি সেই কাজ এখনই হচ্ছে না। সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বর্ষার আগে আপাতত অস্থায়ীভাবে বাঁধের কাজ হবে। এজন্য ৮৭ লক্ষ টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। বর্ষার পরে স্থায়ীভাবে বাঁধের কাজ হবে। এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, বাঁধের কাজের টেন্ডার হয়েছে। এপ্রিলের শেষে কাজ শুরু হবে।
এদিকে মঙ্গলবারই ইংল্যান্ডের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক আত্রেয়ী নদী পরিদর্শনে এসেছেন। তাঁরা ড্যামের পরিকল্পনা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এখন ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে বাঁধ। নদীতে জল নেই। আত্রেয়ীর বাঁধ নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তাঁরা আতঙ্কিতও। বালুরঘাটের বাসিন্দা সুমন দাস বলেন,বাঁধে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। যার ফলে বর্ষার আগেই বাঁধ ভেঙে পড়েছে। এখনও সেচদপ্তর কোনও কাজ করল না। বর্ষার আগে বাঁধ মেরামত না করলে আমরা বিপদে পড়ব।
অস্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামতের যে সিদ্ধান্ত সেচদপ্তর নিয়েছে,তা নিয়েও অসন্তুষ্ট আত্রেয়ীর পাড়ের বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, ৮৭ লক্ষ টাকার টেন্ডার করেও যদি স্থায়ীভাবে কাজ না হয় তাহলে আরও কত কোটি টাকা লাগবে?
সেচদপ্তর সূত্রে খবর, ৮৭ লক্ষ টাকায় বাঁধের প্রোটেকশনের কাজ হবে। বর্তমানে বাঁধের একাংশ নিচু হয়ে গিয়েছে। বাঁধের পাশে ধস নেমেছে। বর্ষাকালে জলের স্রোতে ওই বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে যেতে পারে। বর্ষার আগেই তাই অস্থায়ীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে।
এদিন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষকদের পরিদর্শনের উদ্দেশ্য ছিল, বাঁধের কারণে বালুরঘাট শহর এবং শহরের বাইরে কী প্রভাব পড়েছে, তা খতিয়ে দেখা।
ওই দলে ছিলেন ওই ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডঃ মেহেবুব সাহানা, নদী বিজ্ঞানী ডঃ স্নেহাল দন্ডে এ ছাড়াও বালুরঘাটের পরিবেশপ্রেমী তুহিনশুভ্র মণ্ডল,শেখ আজিম আলি প্রমুখ। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মেহেবুব সাহানা বলেন,আমরা আত্রেয়ী নদীপাড়ের কৃষক ও মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বললাম। আত্রেয়ীর বুকে এই বাঁধ দেওয়ায় ডাউন স্ট্রিমে জল থাকছে না। এভাবে নদীর গতি আটকে দেওয়া যায় না। পরিবেশপ্রেমী তুহিনশুভ্র বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় তুলে ধরব। নদীকে নদীর কাছে ফিরিয়ে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।