নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: স্কুলে যাওয়ার পথে প্রকাশ্য রাস্তায় নাবালিকা ছাত্রীকে কটূক্তি, শারীরিকভাবে হেনস্থা। এমনই অভিযোগে আক্রান্ত ছাত্রীর পরিজনদের হাতে বেদম মার খেয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মূল অভিযুক্ত যুবক। সোমবার এই ঘটনা ঘটেছে রায়গঞ্জের শেরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। দু’পক্ষের তরফে রায়গঞ্জ থানার অধীন কর্ণজোড়া ফাঁড়িতে দায়ের হয় অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ। গোটা ঘটনায় কর্ণজোড়া ফাঁড়ির পুলিস বিবাদমান দু’পক্ষের দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নাবালিকাকে হেনস্তার অভিযোগে পুলিস সনাতন রায় নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত যুবক সনাতনকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগে উজ্জ্বল বর্মন নামে আরও একজনকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। পুলিসের বক্তব্য, মারধরের অভিযোগে ধৃত উজ্জ্বলকে মঙ্গলবার জেলা আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে। ছাত্রীকে হেনস্তায় অভিযুক্ত সনাতন আপাতত রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, দু’পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তার ভিত্তিতে পুলিস বিস্তারিত তদন্তে নেমেছে। দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিস হেনস্তাকারী যুবক সনাতন রায়ের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে খবর,সনাতন রায় নামে ওই যুবক নাবালিকা ছাত্রীর মাঝেমধ্যেই পিছু নিতো, কটূক্তি করতো। যুবকের সেই কার্যকলাপ ছাত্রীটি তার বাড়িতে জানায়। এরপরই ছাত্রীটি স্কুলে গেলে তার পরিবার পরিজন প্রতিবেশীরা দূর থেকে ছাত্রীর উপর নজর রাখা শুরু করে। সোমবারও যথারীতি গ্রামের পথ দিয়ে স্কুলে যাচ্ছিল ছাত্রীটি। সেই সময় ওই যুবককে ফের ছাত্রীটিকে উত্যক্ত করতে দেখেন ছাত্রীর পরিজনরা। তারপর উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। সনাতনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন কয়েকজন। অভিযোগ, ওই সময় সনাতনকে মারধর করা হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয় যে, প্রহৃত যুবকটিকে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে ছুটে যেতে হয় পুলিসকে। সেখান থেকে কোনওরকমে পুলিস যুবকটিকে উদ্ধার করে। শেষে মারধরে গুরুতর আহত ওই যুবককে চিকিৎসার জন্য রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। আর এই ঘটনার পর পুলিসের দাবি, যুবককে মারধরের ঘটনায় ওই নাবালিকার এক প্রতিবেশীকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। যার নাম উজ্জ্বল বর্মন।
এই ঘটনার পর এলাকায় পুলিসের নজরদারি বাড়ানোর দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। স্কুল শুরু ও ছুটির সময়ে পুলিস যাতে টহল দেয়, সেই দাবিও উঠেছে। সোমবার শেরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এই ঘটনায় মঙ্গলবারও এলাকা থমথমে। পুলিস ঘটনার আরও তথ্য সংগ্রহ করছে। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিস বিশেষত স্কুল শুরু ও ছুটির সময়ে নজরদারি বাড়িয়েছে।