• ফ্ল্যাট বিক্রির পর চুক্তি মানছে না প্রোমোটাররা
    বর্তমান | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ফ্ল্যাট হস্তান্তরের পর আর চুক্তিমতো শর্ত মানছে না প্রোমোটাররা। বিপাকে পড়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রাহকরা। এমনই পাঁচটি বড় অবসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। নির্মাণকারী সংস্থাগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে কারণ দর্শাতে বলবেন অধিকারিকরা। তাতে সন্তুষ্ট না হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোলাপবাগ এলাকার একটি আবাসনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। ভালোভাবে নিকাশি ব্যবস্থা না করেই এই সংস্থাটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছে। তার ফলে নিকাশির জল হামেশায় রাস্তায় উঠে আসে। এছাড়াও পানীয় জলের সঙ্কেটর অভিযোগ তুলে এখানকার আবাসিকরা একাধিকবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের  অন্য আর একটি আবাসনের বিরুদ্ধেও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। শহরের আরও তিনটি নির্মাণকারী সংস্থা প্রতিশ্রুতি মতো ফ্ল্যাটে কাজ করেনি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বর্ধমান সদরের মহকুমা শাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এক আধিকারিক বলেন, নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার আগেই গ্রাহকরা ফ্ল্যাট বুকিং করেন। প্রোমোটারদের সঙ্গে তাঁদের একটি চুক্তিও হয়ে থাকে। সেই চুক্তিপত্রে যে সমস্ত শর্ত দেওয়া থাকে, সেগুলি কয়েকটি নির্মাণকারী সংস্থা পালন করছে না। পানীয় জল, আবর্জনা পরিষ্কার সহ বিভিন্ন পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ ওঠে। 

    পুরসভা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শহরে একশ্রেণির প্রোমোটাররা বেপরোয়া মনোভাব দেখাচ্ছে। তারা কোনও নিয়মই মানছে না। ছোট জায়গার উপরেই বহুতল গড়ে উঠছে। অনেক গ্রাহক নির্মাণের আগেই ফ্ল্যাট বুকিং করছে। কিন্তু ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করার সময় তারা একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। ফ্ল্যাটের টাকা পাওয়ার পর আর তারা গ্রাহকদের কোনও কথাই শুনছে না। সেই কারণে তাঁদের বাধ্য হয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, এধরনের অভিযোগ আগেও জমা হয়েছিল। দু’পক্ষর সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছিল। সম্প্রতি আরও  পাঁচটি নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। 

    বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, শহরের বৃহৎ দু’টি আবাসনে কয়েকশো পরিবার বসবাস করছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে ট্যাক্স দেয়নি। অথচ পুরসভা আবর্জনা পরিষ্কার করা সহ বিভিন্ন পরিষেবা দিত। আমাদের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছিল। অবশেষে কয়েকদিন আগে বৈঠক করে সমস্ত আবাসিকদের ট্যাক্স দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। নির্দেশ না মানলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শহরে থাকতে হলে ট্যাক্স দিতেই হবে। 

    তিনি আরও বলেন, প্রোমোটারদের সঙ্গে ফ্ল্যাটের মালিকদের বিবাদ রয়েছে। সেই কারণে তারা ৫০ লক্ষ টাকার বেশি মূল্য দিয়ে ফ্ল্যাট কেনার পরও পুরসভাকে ট্যাক্স দিচ্ছে না। এর কোনও যুক্তি নেই। প্রোমোটার শর্ত না মানলে ফ্ল্যাটের মালিকরা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। তা না করে তাঁরা পুরসভাকে ট্যাক্স দিচ্ছে না। এটা কোনও যুক্তিযুক্ত বিষয় নয়।
  • Link to this news (বর্তমান)