মল্লারপুরে বিজেপি নেতার দাদাগিরি ঘিরে বিতর্ক, সরকারি বাস আটকে কন্ডাক্টরকে বেধড়ক মার, গ্রেপ্তার ১
বর্তমান | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: সরকারি বাসে উঠে দাদাগিরি দেখালেন বিজেপি নেতা। সিট নিয়ে বচসার জেরে বাসের কন্ডাক্টরকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল ওই নেতা ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। যাত্রীদের ভাড়ার টাকাও ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম ১৪নম্বর জাতীয় সড়কের মল্লারপুরে এই ঘটনা ঘটে। পুলিস জানিয়েছে, রাতেই ওই কন্ডাক্টরের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত নেতার সন্ধানে বাড়ি যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি পালিয়ে গিয়েছেন। তবে সেই ঘটনায় যুক্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত বিজেপি নেতা জয়শঙ্কর সিনহার বাড়ি মল্লারপুরে। তিনি বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার নেতা। সোমবার বিকেলে তিনি আসানসোল থেকে মল্লারপুর আসার জন্য এসবিএসটিসির একটি বাসে ওঠেন। সেইসময় একটি ফাঁকা সিটে তাঁকে বসতে বলেন বাসের কন্ডাক্টর সত্যনারায়ণ গৌর। পরে অন্য এক যাত্রী কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে বাসে ওঠেন। বিজেপি নেতা যে সিটে বসেছিলেন টিকিটে সেই আসনের নম্বর লেখা ছিল। কন্ডাক্টর ওই নেতাকে অন্য সিটে বসার জন্য বলেন। তাতেই কন্ডাক্টরের সঙ্গে বচসা শুরু হয় ওই নেতার। মল্লারপুরে কন্ডাক্টরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন।
কন্ডাক্টরের অভিযোগ, মল্লারপুরে ঢোকার আগে তিনি ফোন করে সাঙ্গপাঙ্গকে ডেকে নেন। রাত ৯টা নাগাদ বাসটি বাহিনামোড় অতিক্রম করার সময় ১৫-২০জনের একটি দল বাসটিকে আটকায়। এরপরই ওই নেতা ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা কন্ডাক্টরকে এলোপাথাড়ি কিল- ঘুষি মারতে থাকে। যাওয়ার সময় কন্ডাক্টরের কাছে থাকা যাত্রীদের ভাড়া বাবদ তিন হাজার ৪৮০টাকা ছিনিয়ে নেয়। ভিড়ে ঠাসা সরকারি বাসে উঠে বিজেপি নেতা ও তার দলবলের দাদাগিরিতে ক্ষুব্ধ অন্যান্য যাত্রীরা। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ওই কন্ডাক্টরকে মল্লারপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কন্ডাক্টর থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস তদন্তে নেমে রাতেই মল্লারপুর লাগোয়া মদিয়ান গ্রামের সাইদুল রহমান ও পরচন্দ্রপুর গ্রামের ইয়ারুল শেখকে গ্রেপ্তার করে। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই মূল অভিযুক্ত জয়শঙ্কর গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর খোঁজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে মারধর, টাকা ছিনতাই সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারা যুক্ত করে রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী সৈকত হাটি বলেন, বিচারক ধৃতদের ১৪দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই বিজেপি নেতার মোবাইল বন্ধ থাকায় প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, এবিষয়ে কিছু জানা নেই। তাই কোনও মন্তব্য করব না।