• ‘যোগ্য’ পাস ঝুলিয়ে কারা ইন্ডোরে? ভাইরাল ছবি ঘিরে বিতর্কে শিক্ষকরা
    এই সময় | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের সঙ্গেই বৈঠক করতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু যোগ্য-অযোগ্যদের আলাদা করা হবে কী ভাবে, সেই দায়িত্ব ছিল যোগ্য শিক্ষকদের ওপরেই। তালিকা মিলিয়ে নিজেরা ‘আমরা যোগ্য’ লেখা ‘পাস’ তৈরি করিয়েছিলেন তাঁরা। ওই পরিচয়পত্র দেখিয়ে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ঢুকতে হচ্ছিল চাকরিহারাদের। সোমবার পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, পাস পাওয়ার জন্য এক পক্ষের সঙ্গে অন্য পক্ষের হাতাহাতি পর্যন্ত শুরু হয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া কিছু ছবিতে(যার সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’) দেখা গিয়েছে, ওই একই ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে সেদিন স্টেডিয়ামে ঢুকে পড়েছিলেন বেশ কিছু অধ্যাপক এবং এমন শিক্ষক, যাঁদের আদৌ চাকরি যায়নি। এবং এদের প্রায় সকলেই তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার নেতা।

    ওই পরিচয়পত্র শিক্ষক নেতারা পেলেন কী করে? প্রশ্নের উত্তরে একাধিক কারণ আলোচনায় উঠে এসেছে। কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন, ম্যাডামের সভায় ভিড় বাড়াতে গিয়েছিলেন শাসক দলের শিক্ষক নেতারা।

    বিজেপি নেতা সজল ঘোষ ফেসবুকে ‘আমরা যোগ্য’ লেখা পাস-সহ এমন একজনের ছবি পোস্ট করেছেন। সেই ছবি সিটি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মহীতোষ গায়েনের। সজল লিখেছেন, ‘যোগ্য শিক্ষকই বটে!’। এর একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। সেখানে ওয়েবকুপার আরও এক নেতাকে ‘আমরা যোগ্য’ পাস পরে বেরিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। কেন এসেছেন, প্রশ্ন করা হলে ওই ব্যক্তি উত্তর দিয়েছেন, ‘আমরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে এসেছি।’

    আরও যাঁদের ছবি দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন শান্তিনাথ মণ্ডল। তিনি ওয়েবকুপার উত্তর কলকাতার সহ-সভাপতি। এবং সভাপতি চণ্ডীচরণ মুড়া। তিনি মণীন্দ্র কলেজের শিক্ষক। বেহালা কলেজের শিক্ষক তথা দক্ষিণ কলকাতায় ওয়েবকুপার জয়েন্ট সেক্রেটারি অরিজিৎ মুখোপাধ্যায়কেও দেখা যাচ্ছে ছবিতে। এ ছাড়াও মালদা, রানাঘাট, বসিরহাটের বেশ কিছু স্কুল ও কলেজ শিক্ষককেও দেখা গিয়েছে বৈঠকে। কেন গিয়েছিলেন তাঁরা?

    শান্তিনাথ বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের নেতৃত্ব (এ ক্ষেত্রে মহীতোষের নাম করেছেন তিনি) যেতে বলেছিলেন। আসলে আমরা ভীষণ ভাবে ওই যোগ্য শিক্ষকদের পাশে রয়েছি। বৈঠকে তাঁদের সাহায্য করার জন্য স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করতে সংগঠনের সদস্যরা গিয়েছিলাম।’ ভিড় বাড়ানো বা পরিস্থিতি সামলানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমরা ২০-২৫ জন ছিলাম। এতে কি ভিড় বাড়বে? আর বৈঠক তো খুব ডিসিপ্লিনড হয়েছে।’ অরিজিৎ বলছেন, ‘আমরা সরকারপন্থী শিক্ষক সংগঠন। ফলে যেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের অনুষ্ঠান হয় আমরা যাই। এ ক্ষেত্রেও নেতৃত্বের ডাকে গিয়েছিলাম।’

    কিন্তু সেখানে প্রবেশ তো ছিল নিয়ন্ত্রিত। যোগ্য শিক্ষকদের পাস তাঁরা পেলেন কী করে? অরিজিৎ বলেন, ‘ সংগঠনের কাছ থেকে পেয়েছি। তবে কাদের কীভাবে ওই পাস পাওয়ার কথা, এটা আমি বলতে পারব না।’ মহীতোষ এবং চণ্ডীচরণকে ফোনে পাওয়া যায়নি। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের জবাবও দেননি তাঁরা। অভিযোগ, বৈঠকে বিক্ষোভ হলে যোগ্য শিক্ষকদের ভিড়ে মিশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাই ছিল এদের কাজ।

  • Link to this news (এই সময়)