এই সময়, কোচবিহার: আড়াই বছর ধরে তিল, তিল করে বাড়ির ছোট্ট সদস্যটিকে বড় করে তুলেছিলেন গৃহকর্তা। সন্তানদের মতোই আদর দিতেন তাকে। তবে, হঠাৎ করেই যে সে এমন বেয়াদপ এবং হিংস্র হয়ে যাবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি শঙ্কর সূত্রধর। নিজের কাজ শেষ হলে বাড়িতে ফিরে পোষ্যকে আদর করা অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল তাঁর।
প্রতিদিনের মতো সোমবারও কাজ থেকে ফিরে এসে তিনি আদর করছিলেন শখের ল্যাব্রাডরকে। মাথায়, গায়ে হাত বুলিয়ে শেষে চুমু খেতে গিয়েই দেখা দিল বিপত্তি। ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চুমু খেতে গেলে কামড়ে গৃহকর্তার মাংস তুলে নিল পোষ্য। রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতেই লুটিয়ে পড়েন শঙ্কর। নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। সেই হাসপাতালের বেডে শুয়ে এমন ঘটনার কারণ খুঁজছেন তিনি।
কোচবিহার শহর সংলগ্ন পিলখানা এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর সূত্রধর। পেশায় তিনি কাঠমিস্ত্রি। প্রতিদিনকার মতো সোমবার দুপুরেও কাজ থেকে ফিরে এসে অভ্যাসমতো বাড়ির ল্যাব্রাডরকে কোলে নিয়ে কিছুটা সময় কাটাচ্ছিলেন তিনি। মুখে মুখ ঘষে চুমু খেতেই কামড়ে দেয় সে। ঠোঁটের উপরের অংশের মাংস খুবলে নেওয়ায় রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যায়। প্রবল যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা শঙ্করকে নিয়ে বাড়ির লোকেরা ছোটেন হাসপাতালে। ভর্তি করা হয় কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। সোমবার রাতেই অপারেশন করে ক্ষতস্থান অনেকটাই ঠিক করেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসক স্বপন সরকার বলেন,‘বাড়ির পোষা কুকুর। এমনটা হবে এটা ভাবাও যায়নি। কুকুরের কামড়ে অনেক সময়ে সেলাই করা যায় না। আর এটা অনেক বেশি জখম ছিল। তারপর শুনলাম, নভেম্বর মাসেই কুকুরটিকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তাই প্রায় এক ঘণ্টার একটি অপারেশন করে তিনটে লেয়ারে ঠোঁটটাকে আগের মতো জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে।’
মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি শঙ্কর বলেন, ‘আগে কখনও এমনটা করেনি। বাড়ির কাউকে কোনদিনও কামড়ও দেয়নি। কেন হঠাৎ করেই এরকম হলো, বুঝতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলব।’