এই সময়, মালবাজার: একে হলি ডে সঙ্গে উইক এন্ড। আবার ছুটি সঙ্গে নববর্ষের মেজাজ। তাই গরম বাড়তেই বাঙালির চির পরিচিত উত্তরবঙ্গ তাঁকে ডাকতে শুরু করেছে। ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট প্রকাশ হতে এখনও ঢের দেরি। সব মিলিয়ে ভ্রমণের সব উপাদান রাজযোটকের মতো মিলিয়ে দিলেও অকারণ ছন্দপতন ঘটিয়েছে টিকিটের বিড়ম্বনা। যা রীতিমতো যন্ত্রণার পর্যায়ে পৌঁছেছে। সমস্ত ট্রেনের দশ দিন আগে থেকেই টিকিট ফুরিয়ে গিয়েছে। পর্যটকদের বড় টিমে স্বাভাবিক ভাবেই তৎকাল টিকিটের আশা নেই। এই পরিস্থিতিতে ভরসা যখন শুধু ভলভো বাস তখন তারাও দর ডাবলেরও বেশি করে ভ্রমণপিপাসুদের মাথাব্যথা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আর তাই উত্তর ভ্রমণের উত্তর মেলাতে পারছেন না অনেকেই। ৮ এপ্রিল পর্যন্ত যেখানে ১৫০০ টাকায় শুয়ে বসে ভলভো বাসে চলে আসা যেত, সেটাই আজ বুধবার থেকে দাঁড়াচ্ছে ৪০০০ টাকা। এই আড়াই গুণ লাফ কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে বাস মালিক সংস্থার সাফ কথা, বর্তমানে সবটাই অ্যাপ নির্ভর ডায়ানামিক ফ্রেয়ার প্রাইজ ব্যবস্থা। তাই চাহিদা বুঝেই দর উঠছে চর চর করে।
ছুটির এমন মহার্ঘ্য ছক এই মাসের দিনগুলোকে আগে থেকেই পেঁচিয়ে রেখেছিল। তাই ভ্রমণের এই সুবর্ণ সুযোগ চাহিদা বাড়িয়েছে বিপুল। আগামী বৃহস্পতিবার মহাবীর জয়ন্তী, জাতীয় ছুটি। সঙ্গে শুক্রবারটা ম্যানেজ করলেই কেল্লা ফতে। ১২ এপ্রিল শনিবার ব্যাঙ্ক বন্ধ। এরপর সোমবার ১৪ এপ্রিল আবার ছুটি। ডক্টর বি আর আম্বেদকরের জন্মদিনে জাতীয় ছুটি। পরদিন নববর্ষ। ছুটি এখানেই শেষ হচ্ছে না। ১৮ এপ্রিল গুড ফ্রাইডে আবার জাতীয় ছুটি। সেই সঙ্গে আরও একটা উইক এন্ড।
কিন্তু টিকিটের যাঁতাকলে পড়ে গিয়ে যাত্রা বাতিল হবে না তো, সেই আশঙ্কায় রয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব দিব্যেন্দু দেব বলেন, ‘আমরা অনেক এজেন্সি মারফত সামান্য অগ্রিম নিয়ে এই সময়ে বুকিং পেয়েছি। কিন্তু টিকিট এখনও অনেকেই দেখাতে পারছেন না। টিকিট না দেখলে আমাদেরও একটা সন্দেহ থেকেই যায়।’
কলকাতার দমদম এয়ারপোর্ট এলাকার বাসিন্দা দেবারতি বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন ১৫ জনের একটি বড় দল নিয়ে ডুয়ার্স ও পাহাড় বেড়াতে আসবেন। কিন্তু কোথাও টিকিট পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় একটা বড় গাড়ি ভাড়া করেই চলে আসবেন কি না সেটা ভাবছেন। আবহাওয়া দুই বঙ্গে এখন সম্পূর্ণ বিপরীত। ডুয়ার্সে দিনের বেলায় ফ্যান ঘুরলেও রাতে ফ্যান চললেই রীতিমতো ঠান্ডা লাগছে। বুধবার থেকে বৃষ্টি নামার সঙ্গে তাপমাত্রা আরও নামবে বলে হাওয়া অফিস জানিয়ে রেখেছে। সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘চলতি সপ্তাহের শেষ থেকেই ডুয়ার্স পাহাড়ের বৃষ্টির প্রাবল্য বাড়বে এবং বাতাসের শীত অনুভূত হবে।’