• তাঁর এজলাসেই এই মামলার ‘উত্থান’! অভিজিতের কাছে আইনি পরামর্শ নিতে যাচ্ছেন চাকরিহারাদের একাংশ
    আনন্দবাজার | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
  • নিয়োগ মামলা ঘিরে আলোড়ন শুরু হয়েছিল তাঁর এজলাস থেকেই। এ বার তাঁর কাছেই আইনি পরামর্শের জন্য যাচ্ছেন চাকরিহারাদের একাংশ। প্রাক্তন বিচারপতি বর্তমানে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে মঙ্গলবার দুপুর ৩টেয় তাঁদের বৈঠক।

    নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চে সোমবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজেদের দাবি পড়ে শুনিয়েছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকদের বড় অংশ। সেখানেও তাঁরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা দক্ষ আইনজীবীর অভাব বোধ করছেন। তাই তাঁদের এক জন দক্ষ আইনজীবীর ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। সেই আবহেই এ বার আইনি পরামর্শ নিতে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিতের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিলেন চাকরিহারাদের একাংশ। ঘটনাচক্রে, সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে এঁদের সামনের সারিতে দেখা যায়নি।

    এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিজিৎ বলেন, ‘‘ওঁরা আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। আমাকে কয়েক জনের নামের তালিকাও পাঠানো হয়েছে। সরাসরি কোনও আইনি পরামর্শ দিতে না পারলেও ওঁরা পরবর্তী কী পদক্ষেপ করতে পারেন, সে বিষয়ে আমার দলের নির্দেশ অনুযায়ী কথা বলব।’’ উল্লেখ্য, ২০২১ সালে হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিতের এজলাসেই প্রথম ‘উত্থান’ হয়েছিল এই মামলার। তাই চাকরিহারাদের বিশ্বাস, এই জটিলতা থেকে কী ভাবে বেরোনো যায়, সেই পথ বাতলে দিতে পারেন অভিজিৎই!

    ‘এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের বৈধ চাকরিহারা সমাজ’ মঞ্চের হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে অভিজিতের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন চাকরিহারাদের একাংশ। সোমবারও নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাঁরা। চাকরিহারাদের সংগঠন ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের’ সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না হলেও তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে আলাদা ভাবে চিঠি দিয়ে নিজেদের দাবিদাওয়া জানান। সমাজের তরফে সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিজিৎ আগে বিচারপতি ছিলেন। এত মানুষের চাকরি বাঁচানোর জন্য রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, রাজ্য সরকার যদি এখনও যোগ্যদের একটি নির্ভুল তালিকা প্রকাশ করে ওএমআর শিটগুলির মিরর ইমেজ প্রকাশ্যে আনে, তা হলে হয়তো এখনও আমাদের চাকরি বাঁচানো সম্ভব। আমাদের তাঁর বক্তব্যে আস্থা রয়েছে। তাই আমরা তাঁর সঙ্গে দেখা করব।’’

    দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসি-র ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা-ই বহাল রাখা হয়েছে। ফলে এক ধাক্কায় চাকরি গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৩৫ জনের। এই চাকরিহারাদের একাংশের সঙ্গে সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বৈঠক করেন মমতা। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ছাড়াও ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসেরা। মমতার সামনে মঞ্চে উঠে আট দফা দাবি পড়ে শোনান চাকরিচ্যুতদের প্রতিনিধিরা। নিজেদের অবস্থান জানিয়ে রাজ্য সরকারের সাহায্য চান। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। পাশাপাশি এ-ও জানিয়েছেন, আগে যোগ্যদের সমস্যার সমাধান করা হবে। তার পর যাঁদের ‘অযোগ্য’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে, তাঁদের বিষয়টিও তিনি বিবেচনা করে দেখবেন। যদিও মমতার আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন না চাকরিহারাদের একাংশ। সে কারণেই এ বার পরামর্শ নিতে অভিজিতের দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মমতা সরকারের অতিরিক্ত শূন্যপদ (সুপারনিউমেরারি) তৈরিতেও হস্তক্ষেপ করেনি সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)