• পথ-বিধি ভাঙায় আগেও অভিযুক্ত পরিচালকের গাড়ি
    আনন্দবাজার | ০৯ এপ্রিল ২০২৫
  • বাজারে ঢুকে গত রবিবার এক জনকে পিষে মারার আগেও একই ভাবে পথ-বিধি ভেঙে ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটিয়েছিল পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টোর গাড়ি। পুলিশ সূত্রের খবর, মাত্র তিন মাস আগে ওই ঘটনা ঘটেছিল। এর আগে সব মিলিয়ে ন’টি পথ-বিধি ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে সিদ্ধান্তের মালিকানাধীন ওই গাড়িটির বিরুদ্ধে। তবে কোনওটির ক্ষেত্রেই মামলার নিষ্পত্তি মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত হয়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

    ঠাকুরপুকুরের সাম্প্রতিক ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ফলে, ওই গাড়ির সঙ্গে যুক্ত মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০। এ নিয়ে ঠাকুরপুকুরের ঘটনায় মৃত আমিনুর রহমানের আত্মীয় শেখ রেহানের দাবি, ‘‘বহু অপরাধে যুক্ত রয়েছে গাড়িটি। গাড়ির মালিকই স্টিয়ারিংয়ে বসে পিষে মারলেন। আর পুলিশ অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা করল। কেন এ ক্ষেত্রে খুনের মামলা রুজু হবে না?’’

    গত রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঠাকুরপুকুরের ব্যস্ত বাজারে ভিড়ের মধ্যে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে সিদ্ধান্তের গাড়ি। তিনিই চালকের আসনে বসেছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে। তাঁর সঙ্গে ওই গাড়িতে টলিউডের এক অভিনেত্রী, এক প্রযোজক এবং এক ইউটিউবার ছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে সিদ্ধান্ত এবং সহযাত্রীদের উদ্ধার করে। এর পরে সিদ্ধান্তকে গ্রেফতার করা হয়। আপাতত তিনি পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। গাড়ির অন্য যাত্রীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর।

    মৃতের আত্মীয়েরা খুনের মামলা রুজু করার দাবি জানালেও আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইনের চোখে বাজারে এই ভাবে গাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য কী হতে পারে, সেই জ্ঞান চালকের ছিল বলেই ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু তিনি যে এমনটা ঘটাতেই গাড়ি ঢুকিয়েছেন, সেই উদ্দেশ্য চালকের ছিল বলে প্রমাণ করা শক্ত। তার উপরে তিনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে গাড়ি ঢুকিয়ে এমনটা ঘটানোই চালকের উদ্দেশ্য ছিল, তা প্রমাণ করা আরও শক্ত হয়ে দাঁড়ায়। ফলে খুনের মামলা এ ক্ষেত্রে রুজু হওয়া অতটা সহজ নয়।’’

    কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে নিয়মভঙ্গকারী গাড়ির ক্ষেত্রেও কি পুলিশ চাইলে কড়া পদক্ষেপ করতে পারে না? সেই প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ২০২৩-এর মে থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সিদ্ধান্তের গাড়ির বিরুদ্ধে ৯টি মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বেআইনি পার্কিংয়ের জন্য ৩টি এবং ট্র্যাফিক সিগন্যাল ভঙ্গের জন্য ২টি মামলা হয়েছে। ঠাকুরপুকুরের মতোই পথ-বিধি ভেঙে ঢুকে পড়ার জন্য মামলা হয়েছে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর। কিন্তু তার পরেও বেপরোয়া গাড়ি ছোটানো যে বন্ধ হয়নি, তা রবিবারের ঘটনাতেই স্পষ্ট।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)